খেজুর সুস্বাদু আর বেশ পরিচিত একটি ফল। মরুর এই ফলটি ইফতারিতে থাকাটা যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনি জানেন কি, মিষ্টি এই ফলটি খেলে দূর হতে পারে অনেক রোগ। খেজুরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আঁশ, উপকারী তেল, ক্যালসিয়াম, সালফার, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, কপার এবং আরও নানাবিধ খনিজ। রয়েছে উপকারী ভিটামিনও।
খেজুরের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বলা হয়, চারটি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মি.লি. গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। আছে প্রচুর ভিটামিন বি, যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। আসুন জানা যাক, খেজুরের নানাবিধ উপকারিতা সম্পর্কে-
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া হৃৎপিণ্ডের সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ খেজুর।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকার কারণে নিয়মিত খেজুর খেলে এটি হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্য কমানোর পাশাপাশি এতে বদ-হজম, কোলাইটিস এবং হেমোরয়েডের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
অ্যান্টি অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ
খেজুরে প্রচুর মাত্রায় প্রকৃতির অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা একাধিক রোগকে দূরে রাখার পাশাপাশি শরীর গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ খেজুর ক্যানসার প্রতিরোধ করে। তাই যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের বেলায় ক্যান্সারের ঝুঁকিটাও অনেক কম থাকে।
হাড় সবল রাখে
খেজুরে আছে সেলেনিয়াম, কপার, ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপকারী খনিজ এবং ভিটামিন, যা হাড়কে সবল রাখে। এছাড়াও বয়সী ব্যক্তিরা নিয়মিত খেজুর খেলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
ওজন বাড়াতে সাহায্য করে
যাদের ওজন মাত্রাতিরিক্ত হারে কমে যেতে শুরু করেছে, তারা খেজুর খেলে ওজন বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
খেজুর স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গ্লুকোজের পাশাপাশি প্রাকৃতিক চিনি পাওয়া যায় খেজুর থেকে যা এনার্জি বাড়ায়। খেজুরে থাকা ভিটামিন সি ও ডি ত্বক ভালো রাখে। এছাড়া খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে রাতকানা প্রতিরোধেও সহায়ক।
রক্তশূন্যতা দূর করে
খেজুর নিয়মিত খেলে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার পাশাপাশি শরীরে রক্ত তৈরি করতে সহায়তা করে।
অ্যালার্জি থেকে বাঁচায়
খেজুরে থাকা সালফার অ্যালার্জির মতো রোগ থেকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সংক্রমণ থেকে রক্ষা
যকৃতের সংক্রমণে খেজুর উপকারী। এ ছাড়া গলাব্যথা এবং বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি ও ঠাণ্ডায় বেশ কাজ দেয়। এছাড়া অন্ত্রের কৃমি ও ক্ষতিকারক পরজীবী প্রতিরোধে খেজুর বেশ সহায়ক। অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে।
মায়ের বুকের দুধের পুষ্টিগুণ বাড়ায়
খেজুর বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের জন্য সমৃদ্ধ এক খাবার। যা মায়ের দুধের পুষ্টিগুণ আরও বাড়িয়ে দেয় এবং শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।