শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন

নাগরিকত্ব বিলে ‘ধর্মীয় বৈষম্য’, অমিত শাহের উপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ মার্কিন কমিশনের

নাগরিকত্ব বিলে ‘ধর্মীয় বৈষম্য’, অমিত শাহের উপর নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ মার্কিন কমিশনের

স্বদেশ ডেস্ক: সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) পাশ করিয়ে নিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু তা নিয়ে ঘরে-বাইরে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ওই বিলে ধর্মীয় বৈষম্যকে মান্যতা দেওয়ায় এ বার অমিত শাহ-সহ দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা-মন্ত্রীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি উঠল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
সোমবার লোকসভায় নাগরিকত্ব বিলটি পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তা নিয়ে প্রায় ১২ ঘণ্টার তর্ক-বিতর্ক চলার পার, সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে মধ্যরাতে সেটি পাশ হয়ে যায়। এ বার রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার অপেক্ষা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও, সেখানেও বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়া যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী মোদী সরকার। আর তাতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)। তাঁদের মতে, ওই বিলে নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। সোমবারই সংগঠনের তরফে এ কটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি পেশ করেছেন, তাতে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়ায় ইউএসসিআইআরএফ ভীষণ উদ্বিগ্ন। সংসদের দুই কক্ষে বিলটি যদি পাশ হয়ে যায়। তাহলে অমিত শাহ-সহ সে দেশের অগ্রগণ্য নেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিত মার্কিন সরকারের।’
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কী?
নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক বলেও মন্তব্য করে ইউএসসিআইআরএফ। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক মোড়, যা ভুল পথে এগোচ্ছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী ইতিহাস এবং সে দেশের সংবিধান, যা কি না ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকারের কথা বলে, এই বিল তার পরিপন্থী।’
অসমে নাগরিক পঞ্জি নিয়েও এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল ইউএসসিআইআরএফ। ইচ্ছাকৃত ভাবে মুসলিমদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে সেইসময় দাবি করেছিল তারা। নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়েও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ওই সংগঠন। তাদের দাবি, ‘আমাদের আশঙ্কা, নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরীক্ষা নিচ্ছে ভারতীয় সরকার, যা কি না কয়েক কোটি মুসলিমের নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেবে।’ গত এক দশকে ধর্মীয় বৈষম্য নিয়ে তাঁদের বার্ষিক রিপোর্টকে ভারত সরকার কোনওরকম গুরুত্ব দেয়নি বলেও দাবি করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তৃতীয় কোনও দেশের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না বলে এর আগে ইউপিএ আমলেও বার বার জানানো হয়েছিল। এমনকি, ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে ভারতে আসতে চাইলে, ইউএসসিআইআরএফ-এর আধিকারিকদের ভিসার আবেদনও নাকচ করে দেয় তৎকালীন সরকার। এমনিতে তাদের সুপারিশ মানতে বাধ্য নয় কোনও দেশ। তবে মার্কিন সরকারে তাদের রিপোর্টের অসীম গুরুত্ব রয়েছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কোনও দেশ বা ব্যক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায় কি না, ইউএসসিআইআরএফ-এর রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন বিদেশ দফতর।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877