তানিয়া রায়: জাঁকিয়ে শীত না পড়লে কী হবে! শীতের আমেজ কিন্তু পড়ে গিয়েছে। নিঃসন্দেহে এই আবহাওয়াটা বেশ উপভোগ্য। সঙ্গে বিয়ের মরসুমও শুরু। তাই চুটিয়ে সাজগোজ করলেও মেকআপ নষ্ট হওয়ার ভয় নেই। তবে শীতে একটা বড় সমস্যা থেকেই যায়। এ সময়ে ত্বক বড় বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। নিয়মিত যত্ন না নিলে একেবারে নির্জীব, বয়স্ক লাগে দেখতে। তবে সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললেই শীতেও আপনার ত্বক থাকবে উজ্জ্বল।
• শীত মানেই গরম জলে স্নান করার প্রবণতা থাকে। কিন্তু সেটা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। জলের ঠান্ডা ভাব কাটিয়ে নিন। ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করা ভাল। এতে ত্বকের স্বাভাবিক তেলের মাত্রা বজায় থাকে।
• স্নানের আগে ভাল করে তেল মেখে নেওয়া যায়। অলিভ অয়েল মাখতে পারেন। সরষের তেল বা নারকেল তেলও চলতে পারে। তেল মেখে মিনিট দশেক অপেক্ষা করুন। তেল গায়ে বসলে তার পরে স্নান করে নিন।
• স্নান করতে না পারলে ঈষদুষ্ণ জলে তোয়ালে ভিজিয়ে ভাল করে স্পাঞ্জ করে নিতে পারেন।
• অনেকে আবার তেল মাখতে পছন্দ করেন না। তাঁদের জন্য ময়শ্চারাইজ়ার বাধ্যতামূলক। স্নানের পরে ভাল করে ময়শ্চারাইজ়ার মেখে নিতে হবে।
• গরমকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলেও, অনেকেই শীতকালে সেটা মাখার প্রয়োজন মনে করেন না। কিন্তু শীতকালে সূর্যের তেজ অনেক বেশি থাকে। তাই সানস্ক্রিন মেখে তবেই রোদে বার হওয়া ভাল।
• শীতে প্রকৃতিও বড় বেশি রুক্ষ। বাতাসে আর্দ্রতা একেবারেই কমে যায়। ফলে ধুলো ওড়ে। ত্বক ময়লা হয় বেশি। ডিপ ক্লেনজ়ার দিয়ে দিনে দু’বার ত্বক পরিষ্কার করা দরকার।
• স্কুল-কলেজ-অফিসের চাপে ত্বকের যত্ন নেওয়ার কথা মনেই থাকে না। বাড়ি ফিরে ভাল করে মুখ পরিষ্কার করে গোলাপজল দিয়ে ধুয়ে নিন। এ বার ভাল কোনও ময়শ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিন। ত্বকও সারা দিনের ক্লান্তি কাটিয়ে আবার উজ্জ্বলতা ফিরে পাবে।
• রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হাত-পা ভাল করে পরিষ্কার করে ময়শ্চারাইজ়ার লাগান।
• শীতকালে জল খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এতে শরীর ড্রাই হয়ে যায়। ত্বকে এর প্রভাব পড়ে খুব বেশি। শীতকালেও বেশি করে জল খেতে হবে। সঙ্গে মরসুমি ফল খান।
• শীতকালে মাস্ক লাগালে ত্বক থাকে টানটান, মসৃণ ও নরম। অলিভ অয়েল, কলা, দই ও এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে বাড়িতেই মাস্ক তৈরি করে নিতে পারেন।
• এ সময়ে ত্বকে মৃত কোষ বাড়ে। সে জন্য নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন করাও দরকার। মুসুর ডাল বাটা বা বেসন দিয়ে স্ক্রাব করতে পারেন।
• আপনার ত্বক তৈলাক্ত মানে এই নয় যে, শীতের দিনেও ত্বক তেলতেলে থাকবে। ঠিকমতো যত্ন না নিলে তৈলাক্ত ত্বকও রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এ জন্য মুখে ব্রণ বা কালো ভাব দেখা দিতে পারে। তাই শীতেও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য দরকার বাড়তি যত্ন। ঠিক সানস্ক্রিন ব্যবহার করা প্রয়োজন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য। জেল বেসড সানস্ক্রিন নয়, ওয়াটার বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ময়শ্চারাইজ়ারও ওয়াটার বেসড হতে হবে। এ ধরনের ত্বকে ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইট হেডসের সমস্যা থাকে। শীত কালে যা প্রকট হয়। তাই এ সময়ে নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
• শীতকালে ঠোঁট ফেটে যাওয়াটা আরও একটা বড় সমস্যা। ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে পারেন। গ্লসি লিপস্টিক লাগালেও ঠোঁট নরম থাকে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে লিপবামও ব্যবহার করা যায়।
শীত পড়ার ছাপ দেখা যায় ত্বকেও। তাই সময় থাকতেই সচেতন হলে এড়ানো যায় ত্বকের শীতকালীন সমস্যা।