স্বদেশ ডেস্ক:
টাকা নিয়ে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার চুক্তি করার অভিযোগে রাজশাহী ও দিনাজপুর থেকে পুলিশের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) এবং তিনজন কনস্টেবল।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী এক নারী রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা দায়েরের পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন এএসআই গোলাম রাব্বানী, কনস্টেবল আবদুর রহমান, শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল ও মেহেদী হাসান। তাদের মধ্যে আবদুর রহমান ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সদর দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। এএসআই গোলাম রাব্বানীও আগে পুলিশ কনস্টেবল ছিলেন। তখন তিনি আরএমপিতেই ছিলেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হন।
শাহরিয়ার পারভেজ শিমুলের বাড়ি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায়, আবদুর রহমানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং গোলাম রাব্বানীর বাড়ি কোথায় তা জানা যায়নি। তাদের তিনজনকে শনিবার সন্ধ্যার পর আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া দিনাজপুরে গ্রেপ্তার হওয়া কনস্টেবল মেহেদী হাসানকে রাজশাহীতে আনা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার আগে পুলিশের এই সদস্যরা ১৫-২০ জন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়ার চুক্তি করেন। এ জন্য পরীক্ষার্থীদের প্রত্যেককে খুবই ছোট আকারের হেডফোন সরবরাহ করেন। এই হেডফোনের মাধ্যমে বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নের সব উত্তর বলে দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য একেক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে ১০-১২ লাখ টাকার চুক্তি করা হয়েছিল। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল চেক ও স্ট্যাম্প। পুলিশের অভিযানে কিছু স্ট্যাম্প, একটি ১০ লাখ টাকার চেক এবং ১৪টি গোপন ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরীক্ষার আগের রাতে এই পুলিশ সদস্যদের এমন তৎপরতার বিষয়ে জানতে পেরে প্রথমেই আরএমপি সদর দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর শাহরিয়ার পারভেজ শিমুল ও আবদুর রহমানকে আটক করেন আরএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের নগর ডিবির কার্যালয়েই রাখা হয়। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানা থেকে এএসআই গোলাম রাব্বানীকে আটক করা হয়। এ চক্রের সঙ্গে আর কে কে জড়িত তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুলিশের ধারণা, এ চক্রের সঙ্গে পুলিশ নয়, এমন প্রতারকও জড়িত।
আরএমপির মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ধরনের প্রতারণার চেষ্টার অভিযোগে কারিমা খাতুন নামের এক ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী আজ সন্ধ্যায় রাজপাড়া থানায় একটি মামলা করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এএসআই গোলাম রাব্বানী এবং কনস্টেবল আবদুর রহমান ও শাহরিয়ার পারভেজ শিমুলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলায় আরও একজন পুলিশ কনস্টেবলকে দিনাজপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে রাজশাহী আনা হচ্ছে। রাজশাহী আসার পর তাকেও আদালতে তোলা হবে।’