শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন

সদ্য চালু হওয়া ৩টি প্রকল্প বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে : প্রধানমন্ত্রী

সদ্য চালু হওয়া ৩টি প্রকল্প বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে : প্রধানমন্ত্রী

স্বদেশ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারতের সহায়তায় সদ্য চালু হওয়া তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আজ আমরা যে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করেছি, তা উভয় দেশের জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। আমি বিশ্বাস করি, এসব প্রকল্প আঞ্চলিক যোগাযোগ জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

ঢাকায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের নয়াদিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়াল প্লাটফর্মের মাধ্যমে যৌথভাবে তিনটি ভারতীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করার পর একথা বলেন।

প্রকল্পগুলো হলো- আখাউড়া (বাংলাদেশ)-আগরতলা (ভারত) ডুয়েলগেজ রেলসংযোগ, খুলনা-মোংলা বন্দর রেলওয়ে নির্মাণ প্রকল্প এবং বাগেরহাটের রামপাল মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের ইউনিট-২।

মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট-২ ও ৬৫ কিলোমিটার খুলনা-মোংলা বন্দর রেলসংযোগ ভারতীয় নিয়ন্ত্রণ রেখার (লাইন অব ক্রেডিট) আওতায় এবং আখাউড়া-আগরতলা (ভারত) রেলসংযোগ ভারতীয় অনুদানে বাস্তবায়িত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের যৌথ উদ্বোধন দুই দেশের অসামান্য বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতিফলন।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রমাণ করেছি যে প্রতিবেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেশগুলোর উন্নয়নে উৎসাহিত করে। তবে আমি মনে করি এটি বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ।’

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে উভয় দেশ যৌথ প্রচেষ্টায় অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং চট্টগ্রাম বন্দর ও মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাথে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের যোগাযোগ সহজ করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও অন্যান্য অগণিত ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মূল্যবোধ একই।

তিনি বলেন, ‘ভারতের সাথে সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতায় সাফল্য অর্জন করেছি।’

এসব সাফল্যের মধ্যে রয়েছে- যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক বন্ধন জোরদার করা, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, উন্নয়ন সহায়তা বৃদ্ধি ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করা।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার আরো অনেক সাফল্যের গল্প আগামী দিনগুলোতে দেখা যাবে।

তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী, আগামী দিনগুলোতে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রতিফলন হিসেবে সাফল্যের আরো অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হবে, যা দু’দেশের সম্পর্ককে আরো জোরদার করবে।’

আখাউড়া-আগরতলা রেলসংযোগ দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্য জোরদার করবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।

তিনি বলেন, খুলনা-মোংলা বন্দর রেলসংযোগ প্রকল্প মোংলা বন্দরকে রেলনেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করেছে। যা দেশের অভ্যন্তরে সাশ্রয়ী মূল্যে মোংলা বন্দরের পণ্য পরিবহনে সহায়তা করবে।

তিনি আরো বলেন, ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ উৎপাদনের উৎসের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আরো সাশ্রয়ী মূল্যে নির্ভরযোগ্য ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বিশেষ অবদান রাখবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দর ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ভারতীয়দের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে, যাতে তারা বন্দরগুলো ব্যবহার করতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো উন্মুক্ত করেছি।’

তার সরকারের ভিশন ও সাফল্যের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ গত বছর নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করে এবং ঢাকায় প্রথমবারের মতো মেট্রোরেল চালু করে।

তিনি বলেন, ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও আঞ্চলিক যোগাযোগে বিশেষ অবদান রাখবে।’

এ ছাড়া গত সেপ্টেম্বরে ঢাকায় প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং গত অক্টোবরে পদ্মা সেতুর মাধ্যমে রেল সেবা চালু করা হয়।

দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ কিছুদিন আগে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত-বাংলাদেশ যৌথপ্রযোজিত জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’- এর জন্য ভারত সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

সূত্র : ইউএনবি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877