স্বদেশ ডেস্ক:
টাঙ্গাইলের সখীপুরের দাড়িয়াপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সামিয়া (৯) হত্যা মামলায় মোহাম্মদ সাব্বির মিয়া (২১) নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে তারা।
আসামি সাব্বির মিয়াকে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার দাড়িয়াপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সখীপুর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার সাব্বির মিয়া দাড়িয়াপুর গ্রামের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি একজন মুদি দোকানি।
পুলিশের তথ্যমতে, আলোচিত এই হত্যা মামলার রহস্য দ্রুত উদঘাটনের জন্য টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে টাঙ্গাইলের জেলা পুলিশ, সখীপুর থানা পুলিশ ও ডিবির সমন্বয়ে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই অভিযুক্ত আসামি সাব্বিরকে গ্রেফতার করা হয়।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার সংবাদ সম্মেলনে জানান, সাব্বির মিয়া দাড়িয়াপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই মুদি দোকান চালান। দীর্ঘদিন যাবত তিনি ঋণগ্রস্ত। ঋণদাতারা পাওনা আদায়ের জন্য বারবার চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এমনকি সামিয়া অপহরণের দিন ঋণদাতারা জনসম্মুখে তাকে বকাঝকা করলে তিনি দ্রুত ঋণ পরিশোধ করার উদ্দেশে সামিয়ার বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য সামিয়াকে অপহরণ করেন। সামিয়া তাকে চিনে ফেলায় বিপদ এড়াতে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন সাব্বির।
সামিয়া ঘটনার দিন (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে দাড়িয়াপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় আসামি সাব্বির তাকে অপহরণের উদ্দেশ্য পিছু নেয়। সামিয়া বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছলে সাব্বির তার মুখ চেপে ধরে তাকে নির্জন ঘরে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপরে সামিয়ার বাবার মোবাইলে অডিও বার্তায় পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে সামিয়ার বাবা সখীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরে এ মামলায় তদন্তের কাজে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলের আশপাশে ব্যবহৃত সব মোবাইলের বিষয়ে খোঁজখবর নেন। পুলিশ হেফাজতে থাকা সাব্বিরের মোবাইলের সূত্র ধরেই গতকাল (২৭ সেপ্টেম্বর) সাব্বিরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার একপর্যায়ে তিনি সামিয়াকে অপহরণ করে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ‘আসামিকে আদালতে পাঠানো হবে এবং অতিরিক্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা আদালতে রিমান্ডের আবেদন করব।’