স্বদেশ ডেস্ক:
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হাইকোর্ট ত্রিপুরার সব মন্দিরে পশু বলির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি অরিন্দম লোধের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
কয়েক বছর আগে ত্রিপুরার রাজবাড়িতে দুর্গাপূজা দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যের এক অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ সুভাষ ভট্টাচার্য। তিনি নবমী পূজার দিন দুর্গামন্দিরে মহিষ বলি দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন। তিনি তিন বছর ধরে হিন্দু শাস্ত্রের নানা দিক খতিয়ে দেখেন। এরপর পশু বলি বন্ধের দাবিতে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন হাইকোর্টে। তিন দিন ধরে একটানা এই মামলার শুনানি চলার পর আদালত শুক্রবার মন্দিরে পশু বলির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
তবে সরকারের পক্ষে রাজ্যের আইনজীবী অরুণ কান্তি ভৌমিক পশু বলি বন্ধের আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, শত শত বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। তা ছাড়া ভারত ভাগের পর ১৯৪৯ সালে ত্রিপুরার রাজারা যখন ভারতের রাজ্যগুলোর সাথে যুক্ত হন, তখন ত্রিপুরার সব মন্দিরের পূজা এবং বলির খরচ ত্রিপুরা সরকারের বহন করার চুক্তি হয়। সেভাবে চলে আসছে অতীতের এই প্রথা।
অপর দিকে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবীরা যুক্তি তুলে ধরে বলেন, বেদ-উপনিষদ কোথায়ও লেখা নেই যে, পশু বলি বন্ধ হলে হিন্দু ধর্ম পালনে বাধা তৈরি হবে। আর মন্দিরগুলোতে সরকারি খরচে বলি দিতে হবে, এই দাবির সপক্ষে কোনো দলিলপত্র পেশ করতে পারেনি সরকারপক্ষ।
দুই পক্ষের শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ সরকারের যুক্তি খারিজ করে জানান, পশু বলির অধিকার সংবিধানের ২৫ ধারা অনুযায়ী ধর্মের অধিকারের আওতায় আসে না। এখন থেকে রাজ্যের কোনো মন্দিরে সরকার বা কোনো ব্যক্তি পশু বা পাখি বলি দিতে পারবেন না। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।