স্বদেশ ডেস্ক:
তুরস্কে একটি টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় গত সপ্তাহে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এরপর তিনি নির্বাচনী প্রচারণা স্থগিত করেন। তবে গতকাল শনিবার থেকে তিনি ফের নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেছেন। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরদোয়ানকে শনিবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে এক নির্বাচনি প্রচারে বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা যায়। বন্দর নগরী ইজমিরে এদিন এরদোয়ান হাজির হন। সেই সময় তার ভাষণ শুনতে হাজার হাজার মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা কড়া রোদ উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের হাতে ছিল তুরস্কের পতাকা।
৬৯ বছর বয়সী এরদোয়ান এবার তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন।প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান দেশটিতে গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন। দেশটিতে আগামী ১৪ মে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
দেশটিতে এবার এরদোয়ানের বিরুদ্ধে ছয়টি দল একতাবদ্ধ হয়েছে। দলগুলো এরদোয়ানের বিরুদ্ধে একক প্রার্থী হিসেবে বিরোধী নেতা কেমাল কিলিচদারুগলুকে দাঁড় করিয়েছে।
এরদোয়ানের শাসনামলে তুরস্ক ক্রমশই একটি কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তবে এবারের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তুরস্কের এমন পরিস্থিতির এখন পরিবর্তন ঘটাতে চাচ্ছে।
দেশের অর্থনীতির নাজেহাল অবস্থা, মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধগতি, জোড়া শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু-এবার এরদোয়ানকে নাজুক করে দিয়েছে। তুরস্কের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যতো ভোট পড়বে, কোনো প্রার্থী যদি তার ৫০ শতাংশের বেশি পান, তাহলে তিনি সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। এটি না হলে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই তুরস্কের ভোটাররা বিভক্ত। কিন্তু ৬৯ বছর বয়সী এর আগে এমন চাপের মুখে আর পড়েননি। জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, এরদোয়ানের চেয়ে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী জোটের প্রার্থী এগিয়ে আছেন।
২০০২ সাল থেকে এরদোয়ানের জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে) ক্ষমতায় আছে এবং ২০০৩ সাল থেকে তুরস্ক শাসন করছেন এরদোয়ান। এবারের নির্বাচনে দেশটিতে ৬০ লাখ নতুন ভোটার ভোট দেবেন। নতুন প্রজন্মের এসব ভোটার এরদোয়ান ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক নেতাকে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে দেখেন নি।
এরদোয়ান শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এরপর ২০১৪ সালে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হন। ২০১৬ সালে ব্যর্থ এক সামরিক অভ্যুত্থানের পর এরদোয়ান নাটকীয়ভাবে তার ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। তুরস্কে তিনি হয়ে ওঠেন একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী।