রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:২৪ পূর্বাহ্ন

৪৬ বছরের ‘যন্ত্রণা’ ঘোচাতে চায় তৃণমূল আ.লীগ

৪৬ বছরের ‘যন্ত্রণা’ ঘোচাতে চায় তৃণমূল আ.লীগ

স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে রংপুর সদর আসনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সিদ্দিক হোসেন। মাঝখানে কেটে গেছে ৪৬ বছর। এ দীর্ঘ সময় ধরে সদর আসন আওয়ামী লীগের হাতছাড়া। সাধারণ নেতাকর্মীরা মনে করছেন, উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল হলে এ আসনটি বরাবরের মতো আবারও জাপার ‘ঘরে’ চলে যেতে পারে। তাই দীর্ঘদিনের ‘যন্ত্রণা’ ঘোচাতে যোগ্য ও ত্যাগী কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

সম্প্রতি এ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ মারা যান। এ কারণে আসনটি শূন্য ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। চলতি মাসের শেষে অথবা আগামী সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আওয়ামী লীগের কমপক্ষে দেড় ডজন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে মাঠে প্রচার চালাচ্ছেন। পোস্টার লাগিয়েছেন দেয়ালে দেয়ালে। ব্যানার ঝুলিয়েছেন সড়কের মোড়ে মোড়ে।

এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী খালেকুজ্জামান, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সাফি, সাধারণ সম্পাদক তুষারকান্তি ম-ল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন, চিকিৎসক নেতা ডা. দেলোয়ার হোসেন, জেলা মহিলা লীগের সাবেক সহসভাপতি রোজি রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, মহানগর আ.লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট দিলশাদ হোসেন, জাতীয় শ্রমিক লীগ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এমএ মজিদসহ আরও বেশ কয়েকজন।

গত শুক্রবার চৌধুরী খালেকুজ্জামানের সমর্থনে নগরীতে একটি মোটরসাইকেল র‌্যালি বের হয়। প্রতিদিনই মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সভা-সমাবেশে গিয়ে নিজেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা মার্কায় ভোট চাইছেন।

আওয়ামী লীগের কর্মী রবিউল ইসলাম, যুবলীগ কর্মী মতিনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, প্রায় অর্ধশতাব্দী থেকে এ আসন আওয়ামী লীগের হাতছাড়া। আসনটি ফিরে পেতে হলে এখানে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী দিতে হবে। তা না হলে আসনটি জাতীয় পার্টির ঘরে চলে যেতে পারে।

১৯৭৩ সালে এ আসনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সিদ্দিক হোসেন। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে জয় পান বিএনপির রেজাউল হক সরকার রানা। এর পর থেকেই আসনটি জাতীয় পার্টির। ১৯৮৬ সালে শফিকুল গণি স্বপন, ১৯৮৮ সালে মোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, ২০০১ সালে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের, ২০০৮ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, ২০০৯ সালে (উপনির্বাচন) রওশন এরশাদ, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ আসনে নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা চৌধুরী খালেকুজ্জামান বলেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলাম। কিন্তু জোটগত কৌশলের কারণে প্রতিবারই তাকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে হয়েছে। কিন্তু এলাকার উন্নয়নে এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়া উচিত। জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিতে চায়। তাই এখানে নৌকা প্রতীকে একজন যোগ্য প্রার্থী দেওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করীম রাজু বলেন, যার সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের যোগাযোগ রয়েছে, দলীয় নেতাকর্মীদের ভালো-মন্দের খোঁজখবর রাখেন, সংসদে গিয়ে রংপুরের উন্নয়নের কথা বলতে পারবেনÑ তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া উচিত।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সাফি বলেন, এরশাদের অবর্তমানে রংপুর-৩ আসন আর জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হবে না।

সাধারণ সম্পাদক তুষারকান্তি ম-ল বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন চাইব। দল মনোনয়ন দিলে এলাকার দাবি আদায়ের জন্য কাজ করব। তবে নৌকা প্রতীক যাকেই দেওয়া হোক, তার জন্য কাজ করব।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রেজাউর ইসলাম মিলন বলেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে নৌকার বিকল্প নেই। আমিও মনোনয়নপ্রত্যাশী। দল মনোনয়ন দিলে মানুষের জন্য কাজ করব। মনোনয়ন না পেলেও নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করব।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877