স্বদেশ ডেস্ক: সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৪৪০ হিন্দু রোহিঙ্গা পরিবারকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। গতকাল রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে এ তথ্য জানান।
গত শনিবার থোয়ের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প গিয়ে দুই দফায় বৈঠক করেন। আজ তারা আবার সেখানে তৃতীয় দফায় বৈঠক করেন। এ বৈঠক শেষে মিয়ানমারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
মিন্ট থোয়ে বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের প্রস্তুতি সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের জানিয়েছি। একই সঙ্গে তিন দফায় বৈঠকে রোহিঙ্গাদের দাবিগুলোও আমরা জেনেছি। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে মিয়ানমার তিন ক্ষেত্রে আলোচনা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যে আলোচনা হয়েছে তা আবারও হবে। একই সঙ্গে আসিয়ানের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা হবে। আসিয়ানের রোহিঙ্গা সংক্রান্ত মার্চ মাসে দেওয়া প্রস্তাবনা বিবেচনা করা হবে।’
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া উভয় পক্ষের আলোচনার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি ঢাকায় ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত বৈঠক হবে।’
জানা গেছে, রোববার সকালে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি কুতুপালং ৪ নম্বর ক্যাম্পে যায়। সেখানে গতকাল শনিবার ৩৫ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে তৃতীয় দফায় বৈঠক করেন তারা। টানা দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠকে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিজেদের নানা দাবির কথা জানান রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গারা তাদের দাবিতে বলেন, নাগরিকত্ব, স্বাধীন চলা-ফেরার নিরাপত্তা দিলে তারা স্বদেশে ফেরত যাবেন। মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা তাদের কথা শোনেন এবং রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত যাওয়ার আহ্বান জানান। ফেরত গেলে তাদের দাবিগুলো বিবেচনা করা হবে বলেও তারা আশ্বাস দেন। এরপর মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গা হিন্দু ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। সেখানে তারা হিন্দু রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলাপ করে ৪৪০ পরিবারকে মিয়ানমারে ফেরত নিতে সম্মত হন।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি গতকাল সকাল ১০টায় কক্সবাজার পৌঁছে। এরপর তারা উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন যান। ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের ৩৫ জনের একটি দলের সঙ্গে দুই দফায় আলাপ আলোচনা শুরু করেন। এ সময় রোহিঙ্গাদেরকে নিজ দেশে ফিরে যেতে আহ্বান জানান মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে ফিরে গেলে সেখানে কি রকম সুযোগ সুবিধা পাবেন তার সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। এ সময় রোহিঙ্গাদের পক্ষে নানা দাবি উত্থাপন করা হয়।