স্বদেশ ডেস্ক: ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গতকাল শনিবার সকাল ৬টা হতে নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এর আগে সকাল ৯টায় ৪৮ সেন্টিমিটার, দুপুর ১২টায় ৬ সেন্টিমিটার কমে নদীর পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকেল ৩টা থেকে ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পুরো পরিস্থিতি পর্যবক্ষেণ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভয়ংকর হয়ে উঠেছে তিস্তা নদী।
নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পুর্বাভাস সর্তকীকরন কেন্দ্র জানায়, ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। তবে তিস্তাপাড়ের মানুষজন বলছেন, নদীর পানি কমেনি বরং আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিগত কয়েক বছরের চেয়ে এবার তিস্তা নদীর বন্যা ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা অববাহিকায় হলুদ সংকেত জারি অব্যাহত রেখেছেন।
আজ শনিবার দুপুরে তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে আসেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবীর বিন আনোয়ার। ডিমলা উপজেলার ফরেস্টের চর, ছোটখাতার চরসহ বিভিন্ন বন্যা দূর্গত এলাকাও পরিদর্শন করেছেন তিনি।
নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ১৫টি চর ও চরগ্রামের ১৫ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ পানিবন্ধি হয়ে জীবন যাপন করছে।
আজ নীলফামারীর জেলা প্রশাসক শাহীনুর আলম, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহারসহ সংশ্লিস্ট কর্মকর্তাগণ তিস্তার বাধে আশ্রিত বানভাসীদের খোঁজখবর নিয়ে তাদের মাঝে ত্রান বিতরন করেছেন।
এ সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষে ডিমলা উপজেলার বানভাসীদের জন্য ১৫০ মেট্রিকটন চাল, দেড় হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, নগদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা এসএ হায়াত ত্রাণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা ছাড়া অতিরিক্ত ৫০০ মেট্রিকটন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবারের জন্য আরও চাহিদাপত্র পাঠান হয়েছে।
উজানের ঢল সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের সবকটি স্লুইচ গেট (৪৪টি)। পাউবোর গেজ পাঠক পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে তিস্তার বন্যায় বসতঘর প্লাবিত হওয়ায় মানুষজন তিস্তার ডান তীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, দুপুর ১২টায় ৬ সেন্টিমিটার কমে নদীর পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকেল ৩টায় ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, তিস্তা ব্যারাজের সবকটি স্লুইচ গেট খুলে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তিস্তা অববাহিকায় হলুদ সংকেত জারি অব্যাহত রয়েছে।