স্বদেশ ডেস্ক: জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কাশ্মীরের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছে চীন। গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে চীন কাশ্মীর পরিস্থিতিকে ভয়াবহ ও বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করে। চীনা কূটনীতিক নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন, ভারত সরকারের এ ধরনের একতরফা সিদ্ধান্ত ‘বৈধ নয়’। বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানায় চীন।
এদিকে বৈঠক শেষে জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি তথা রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আকবরউদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন। এ নিয়ে পাকিস্তান বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, সন্ত্রাসে মদদ দিচ্ছে।’ খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভির।
গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এ বিষয়ে জাতিসংঘে বৈঠকের আবেদন করে পাকিস্তান। পরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি চিঠি দেন নিরাপত্তা পরিষদে। নিরাপত্তা
পরিষদের সভাপতি জোয়ানা রোনেকাকে এ চিঠি দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালেহা লোদি। পরে কুরেশি সমর্থন আদায়ে চীন সফর করেন।
নিরাপত্তা পরিষদের এক কূটনীতিক জানান, বৈঠকটি রুদ্ধদ্বার হওয়ায় পাকিস্তান ও ভারত তাতে অংশগ্রহণ করেনি। এ ধরনের বৈঠক সম্প্রচার বা সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
এক সংবাদ সম্মেলনে চীন দাবি করে, সংবিধান সংশোধন করে ভারত সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার দ্বিপক্ষীয় চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এই মুহূর্তে কাশ্মীরের পরিস্থিতি ভয়াবহ। কাশ্মীরের দীর্ঘদিনের অবস্থা ভারতের সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে গেছে। ভারতকে কাশ্মীর ইস্যুতে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোদি নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর ইস্যুতে বৈঠক আয়োজনকে স্বাগত জানান এবং চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আজ কাশ্মীরি মানুষের কথা শোনা হয়েছে। তারা একা নয়, জম্মু-কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ সমাধানে আমরা প্রস্তুত।
এদিকে জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, কাশ্মীর থেকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহারে ভারতের জাতীয় অবস্থান যা ছিল সেটাই থাকবে, এটি পুরোপুরিই অভ্যন্তরীণ বিষয়। তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ধীরে ধীরে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বদ্ধপরিকর সরকার এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, অন্য কোনো বিষয় নেই, ভারত সরকারের নেওয়া সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত এবং আমাদের আইনসভা সুনিশ্চিত করতে চায়Ñ ভালো পরিসেবা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
পাকিস্তানকে উল্লেখ করে আকবরউদ্দিন বলেন, তারা চেষ্টা করছে, সতর্কতামূলক পরিস্থিতি তুলে ধরতে, যা প্রকৃত সত্য থেকে বহুদূরে। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট উদ্বেগ হলোÑ ‘জিহাদ’ শব্দটি ব্যবহার করছে একটি রাষ্ট্র এবং তাদের নেতাসহ ভারতে সন্ত্রাসে মদদ দিচ্ছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকটি আনুষ্ঠানিক না হওয়ায় তার ফলের কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে না।
বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে রাশিয়ার ডেপুটি স্থায়ী সদস্য দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, মস্কো মনে করে এটি ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষীয় বিষয়।