শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

কচুরিপানায় ভরা বুড়িগঙ্গা : নৌকা চলাচল বন্ধ

কচুরিপানায় ভরা বুড়িগঙ্গা : নৌকা চলাচল বন্ধ

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র বুড়িগঙ্গা দুই দিন ধরে কচুরিপানায় টইটম্বুর। বাবুবাজার ব্রিজ থেকে বরিশুর পর্যন্ত এ কচুরিপানা। খেয়া পারাপার বন্ধ থাকায় বিআইডব্লিউটিএর ইজারা দেয়া ১৭টি ঘাটে লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হচ্ছে। ১৫ শ’ মাঝির চুলা জ্বলেনি।
বিআইডব্লিউটিএর ইজারা দেয়া আগানগর ঘাট, নলগোলা রাজকুঠি ঘাট, পান ঘাট, ইমামগঞ্জ ঘাট, চম্পাতলি ঘাট, মাছুয়া ঘাট, জিনজিরা টিনপট্টি ঘাট, নবাবেরবাগ ঘাট, বাবুবাজার ঘাট, মান্দাইল এবং বরিশুর খেয়াঘাট পর্যন্ত কচুরিতে ভরা। যেখানে প্রতি মিনিটে একটি করে বাল্কহেড চলে সেখানে দুই দিনে ১০টিও চলেনি। তা ছাড়া বাবুবাজার ব্রিজ থেকে বরিশুর খেয়াঘাট পর্যন্ত কচুরিপানায় বুড়িগঙ্গা ভরা থাকায় কোনো নৌকা চলাচল করতে পারেনি। ১৭টি খেয়াঘাটের মালিকরা দুই দিনে প্রত্যেকের হাজার হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। তা ছাড়া ১৫ শ’ মাঝির চুলা জ্বলেনি তাই খাবার জোটেনি।

আগানগর খেয়াঘাট ইজারাদার টিটু আহম্মেদের পার্টনার মাহাবুব এ প্রতিবেদককে বলেন, দুই দিন যাবত বুড়িগঙ্গায় কচুরিপানায় টইটম্বুর। কোথাও কোনো ফাঁক নেই। আর এ লাইন বরিশুর পর্যন্ত। বাবুবাজার থেকে বরিশুর পর্যন্ত ১৭ থেকে ১৮টি খেয়াঘাট রয়েছে। তা ছাড়া আনুমানিক ১৫ শ’ মাঝি নৌকা বাইয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন এ ঘাটগুলোতে।
তিনি বলেন, গত দুই দিনে ১০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তাদের। কচুরিপানা গাদাগাদি থাকায় কোনোভাবে চলছে না নৌকা। তাই যাত্রী পার হচ্ছে না। তবে কোনো কোনো মাঝি সাহসিকতার সাথে যাত্রী উঠালেও নদীর মাঝখানে তারা আটকে যাচ্ছে।

বিভিন্ন ঘাটের শতাধিক মাঝি এ প্রতিবেদককে জানান, গত দুই দিন ধরে কচুরিপানায় ভরে গেছে বুড়িগঙ্গা। কোনোভাবেই নৌকা বাওয়া সম্ভব না। দিনে যা আয় করেন তা ওই দিনে ছেলেমেয়ে নিয়ে খাওয়াদাওয়ায় শেষ। প্রতিদিন যা আয় তা খরচ হয় খাবারে। প্রতিদিন তিন থেকে চার শ’ টাকা আয় হতো। এখন দুই দিন ধরে না খেয়ে আছেন তারা।
বাবুবাজার ঘাটের ৭০ বছরের বৃদ্ধ আবেদিন বলেন, বছিলার দিক থেকে কচুরিপানা আসতেই থাকে। একপর্যায়ে বাবুবাজার ব্রিজের নিচে ঠেকে। তা ছাড়া বিআইডব্লিউটিসির একাধিক জাহাজ বাবুবাজারে নোঙর করা থাকে। তাই কচুরিপানা সরতে পারে না। এ কারণেও সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, দুই দিন তার পেট ভরে খাওয়া হয়নি। কামাই নাই, তাই খাবারও ঝোটেনি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

জিনজিরা ঘাটের মাঝি সোলেমান জানান, দুই দিন যাবত এত কচুরি তা আগে কোনো দিন দেখেননি তিনি। ৩০ বছরে এত কচুরিপানা এই প্রথম। তিনি বলেন, এর আগেও প্রতি বছর কচুরি দেহি বুড়িগঙ্গায়। তবে এ বছর এত কচুরি আর কোনো বছর দেখেননি তিনি। নৌকা বাইতে পারিনি বলে না খেয়ে আছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877