স্বদেশ ডেস্ক:
সোমালিয়ার আইনপ্রণেতাদের ভোটে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহাম্মদ। গতকাল রোববারের ভোটাভুটিতে ২১৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। এর আগে ২০১২-১৭ মেয়াদে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন শেখ মোহাম্মদ।
আলজাজিরা, বিবিসিসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীদের হামলার আশঙ্কায় সাধারণ নির্বাচনের পরিবর্তে আইনপ্রণেতাদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন হাসান শেখ মোহাম্মদ। গৃহযুদ্ধবিধ্বস্ত হর্ন অব আফ্রিকায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠান বিলম্বিত হচ্ছিল।
জানা গেছে, নির্বাচন উপলক্ষে রাজধানী মোগাদিসুতে কারফিউ জারি করা হয়। নিরাপত্তার কারণে বিমানবন্দরের একটি কম্পাউন্ডে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা।
ম্যারাথন এই নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৩৬ জন। ভোটাভুটি সরাসরি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন ৩২৮ জন আইনপ্রণেতা। অবশ্য একজন ভোটদানে বিরত ছিলেন। আর তিনটি ভোট নষ্ট হয়।
সোমালিয়ার পার্লামেন্টের স্পিকার শেখ আদান মোহাম্মদ নূর মাদোবি জানান, নির্বাচনে শেখ মোহাম্মদ পেয়েছেন ৩২৭ ভোটের মধ্যে ২১৪টি। অপরদিকে, সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আবদুল্লাহি ফারমাজো পেয়েছেন ১১০ ভোট।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ মোহাম্মদের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর কারফিউ উপেক্ষা করে মোগাদিসুর সড়কে নেমে আসেন তার সমর্থকেরা। ফাকা গুলি ছুড়ে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাজনৈতিক সংকটের অবসান হতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পরাজয় স্বীকার করে নিয়ে মোহাম্মদ আবদুল্লাহি ফারমাজো বলেছেন, ‘পার্লামেন্টে যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন ও দেননি তাদের সবার প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’ এরপর নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন হাসান শেখ মোহাম্মদ। এ সময় দেওয়া ভাষণে সবাইকে নিয়ে কাজ করার কথা জানান তিনি।
নতুন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটা অবশ্যই প্রশংসনীয় যে প্রেসিডেন্ট আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের শত্রুতার প্রয়োজন নেই, কোনো প্রতিশোধও নয়।’
উল্লেখ্য, ইউনিয়ন ফর পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির নেতা হাসান শেখ মোহাম্মদের বয়স ৬৬ বছর। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই তার দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সোমালিয়ার সবচেয়ে বড় হাওয়াইয়ে গোষ্ঠীর সদস্য তিনি। সবাইকে নিয়ে কাজ করার মতো রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বিবেচনা করা হয় নতুন এই প্রেসিডেন্টকে।