স্বদেশ ডেস্ক:
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে কোনো চাপ অনুভব করছেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে, সেই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমকে সামনে রেখে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। তিনি প্রধানমন্ত্রী নাকি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়ার কথা বলেছেন বিষয়টি স্পট নয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে সেই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট হবে ইভিএমে।
ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে আলোচনা হচ্ছে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কী করবে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘সেটি নিয়ে পত্রিকায় আসছে এবং আমাদের বক্তব্যগুলো আপনাদের জানানো হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠান করার দায়িত্ব আমাদের। হয়তো আপনারা বলতে পারেন যে প্রধানমন্ত্রী একটি বক্তব্য দিয়েছেন এবং বিভিন্নজন থেকে বক্তব্য আসতে পারে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নাকি আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলা, বিএনপির প্রধান বলা, জাসদের আব্দুর রব বলা এগুলো ভিন্ন কথা।’
তিনি বলেন, ‘আর সব থেকে কথা যেটি স্পষ্ট করে বলতে চাচ্ছি, অনেকে ইচ্ছা পোষণ করতে পারেন, সদিচ্ছা ব্যক্ত করতে পারেন আর ইভিএমে ভোট দেওয়ার বিষয়ে আমরা এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। এরই মধ্যে আমরা অনেকগুলো সভা করেছি, আগামীতে আরও সভা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে। ভোট স্বাধীনভাবে আমরা পরিচালনা করবো যতদূর সম্ভব। এটা আমাদের এখতিয়ারভুক্ত, পদ্ধতিও আমাদের এখতিয়ারভুক্ত।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সিদ্ধান্ত আমাদের ওপরেই থাকবে। মতামত আমরা বিবেচনায় নিতে পারি। আপনিও মতামত দিতে পারেন, রাস্তায় কেউ মতামত দিতে পারেন, রাজনৈতিক দলগুলো মতামত দিতে পারবেন। আল্টিমেটলি আমরা পর্যালোচনা করে ভোট কোন পদ্ধতি ও কেমন হবে সিদ্ধান্ত নেবো। সেটি আমাদের বিষয়। এ বিষয়ে আমরা স্বাধীন।’
সব আসনে ইভিএমে ভোট করার মতো সামর্থ নির্বাচন কমিশনের নেই উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘৩০০ আসনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা এখনো নেইনি। ভোট ব্যালটে হবে না ইভিএমে, কতটি আসনে ইভিএমে হবে এ বিষয়ে কমিশন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এটি পর্যালোচনাধীন রয়েছে।’
‘এনআইডি পাওয়ার জন্য মানুষের উৎসাহ আছে, কিন্তু ভোটের মাঠে কেন মানুষ যায় না?’— এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর আমি দেবো না। আমাদের দায়িত্ব ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা। আমাদের কর্মীরা ভোটার তালিকা প্রণয়ন করতে মাঠে যাবে। যে প্রশ্নটা করেছেন, সেই প্রশ্নের কোনো মন্তব্যই আমি করবো না।’
এর আগে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের শুদ্ধ ও সিদ্ধভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দিয়ে সিইসি বলেন, ‘শুদ্ধ ও সঠিক ভোটার তালিকা ছাড়া প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন সম্ভব নয়।’
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।