স্বদেশ ডেস্ক:
দেশের অভিজাত এলাকায় বসবাসকারীদের তুলনায় বস্তির মানুষদের মধ্যে কোভিড ১৯-এর অ্যান্টিবডি বেশি পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ধনীদের তুলনায় নিম্নআয়ের মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি বেশি। এ ছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে পরবর্তী ৬ মাস পর্যন্ত জ্বর, কাশি, গলাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা গেছে। সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ’-এর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষক দল করোনা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মশা বা অন্য কীটপতঙ্গের
মাধ্যমে ছড়ায় এমন রোগ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া রোগের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে গ্রামে ও শহরে কঠোর নজরদারি চালানোর পরামর্শ দিয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বস্তির ৭১ শতাংশ মানুষের মধ্যে কোভিড ১৯-এর অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বস্তিসংলগ্ন এলাকায় যাদের বসবাস তাদের মধ্যে এ হার ৬২ দশমিক ২ শতাংশ। তবে চট্টগ্রামের তুলনায় ঢাকার মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি। যেখানে চট্টগ্রামের মানুষের ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ, সেখানে ঢাকার মানুষের শরীরে এ হার ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত হাত ধুয়ে থাকেন, মুখে কিংবা নাকে হাতে দেন না, বিসিজি টিকা নিয়েছেন এবং মধ্যমানের কায়িক পরিশ্রম করে এমন ব্যক্তির করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় ঝুঁকি কম। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব উল্লেখযোগ্য হারে লক্ষ করা গেছে। তবে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলেনি। এ ছাড়া যারা করোনায় আক্রান্ত হননি তাদের তুলনায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের রক্তে জিংকের মাত্রা যথাযথ পরিমাণে ছিল।
যারা এর আগে রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) অথবা হিউম্যান করোনা ভাইরাস (এইচকভ এইচকেইউ-১) আক্রান্ত হয়েছেন তারা কোভিড-১৯ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে ছিলেন। অন্যদিকে যারা ডেঙ্গু অথবা চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা কোভিড-১৯ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ায় বেশি ঝুঁকিতে ছিল।
জরিপে যারা অংশ নিয়েছেন তাদের ৩৬ শতাংশ মানুষের মধ্যে চলমান অথবা পূর্ববর্তী ৬ মাসের মধ্যে করোনার মতো উপসর্গ ছিল। তাদের মধ্যে জ্বর, শুষ্ক কাশি, গলাব্যথা অথবা একই সঙ্গে করোনার তিনটি উপসর্গই উপস্থিত ছিল।
গবেষণায় তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বস্তিসংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত নিম্নমধ্যবিত্তদের তুলনায় বস্তিবাসীর শরীরে কোভিড ১৯-এর অ্যান্টিবডি বেশি পাওয়া যায়। স্থূলতা ও ডায়াবেটিস রয়েছে এমন মানুষদের কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ায় ঝুঁকি বেশি।
এ ছাড়া গবেষক দল সংক্রমণের মাত্রা বুঝতে অ্যান্টিবডিসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। মহামারীসংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে। করোনা উপসর্গ নিয়ে পক্ষপাতমূলক তথ্য সরবরাহ বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে গবেষণায়।