স্বদেশ ডেস্ক :
করোনার নমুনা পরীক্ষায় প্রতারণার মামলায় ডা. সাবরিনা চৌধুরীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ পিছিয়ে আগামী ৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। আজ বুধবার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন রাষ্ট্রপক্ষ কোনো সাক্ষী আদালতে হাজির করতে না পারায় ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভুঁইয়া পরবর্তী সাক্ষ্যের এ দিন ধার্য করেন।
আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান জানান, মামলাটিতে এর আগে ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, ডা. সাবরিনার স্বামী আরিফ চৌধুরী, আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা আক্তার পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস ওরফে বিপুল দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা রুমা। আসামিরা সবাই কারাগারে রয়েছেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, এ মামলায় গত ২২ জুন জেকেজির সাবেক গ্রাফিক্স ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশ। হিরু স্বীকারোক্তি দিয়ে জানান তিনি ভুয়া করোনা সার্টিফিকেটের ডিজাইন করতেন। যার সঙ্গে জেকেজি গ্রুপের লোকজন জড়িত। ওই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুলসহ চারজনকে আটক করে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর জ্ঞাতসারেই সব কিছু হয়েছে। এরপর গত ১২ জুলাই ডা. সাবরিনা গ্রেপ্তার হন। ১৩ জুলাই তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে ১৭ জুলাই তার ফের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ২৩ জুন আরিফ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে গত ১৫ জুলাই তাকে ফের চার দিনের রিমান্ড দেন আদালত। ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক। আরিফের চতুর্থ স্ত্রী সাবরিনা। তার প্রথম এবং দ্বিতীয় স্ত্রী রাশিয়া ও লন্ডনে থাকেন। তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে। ডা. সাবরিনার কারণেই করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ পায় জেকেজি হেলথকেয়ার। প্রথমে তিতুমীর কলেজ মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকা, নায়ায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করেছিল। নমুনা সংগ্রহের জন্য মাঠকর্মী নিয়োগ দেয় তারা। তাদের হটলাইন নম্বরে রোগীরা ফোন করলে মাঠকর্মীরা বাড়ি গিয়ে এবং বুথ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করতেন। এভাবে নমুনা সংগ্রহ করে তারা ২৭ হাজার রোগীকে করোনার পরীক্ষার রিপোর্ট দেন। যার মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটি জাল-জালিয়াতির মধ্যেমে তৈরি করে। প্রত্যেক সার্টিফিকেট দেওয়ার বিনিময়ে তারা পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়েছেন।