স্বদেশ ডেস্ক:
শীতের আগেই ব্রিটেন, রাশিয়া, রুমেনিয়া ও তুরস্কের মতো দেশে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে চলায় দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সূত্র অনুযায়ী শুধু ইউরোপেই এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
শীতকাল আসার আগেই ইউরোপের একাধিক দেশে করোনা সংক্রমণ আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে। ব্রিটেনে দিনে এক লাখ সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সরকারের উদ্দেশ্যে পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে আরো কড়া পদক্ষেপ নেবার আবেদন জানালেও সরকার এখনো সেই ডাকে সাড়া দেয়নি। সে দেশে ডেল্টা সংস্করণের এক নতুন গোত্র সংক্রমণের হার বাড়িয়ে তুলেছে বলে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
রাশিয়ায় দৈনিক সংক্রমণের হার মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কর্মীদের এক সপ্তাহের জন্য বাসায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সে দেশের হাসপাতালগুলো রোগীদের চাপ সামলাতে না পারায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে। মাত্র ৩২ শতাংশ মানুষ করোনা টিকা পাওয়ায় সংকট আরো জোরালো হয়ে উঠেছে। রোমানিয়ার হাসপাতালেও নতুন রোগী ভর্তি করা কঠিন হয়ে পড়ছে। জার্মানিসহ ইউরোপের আরো কিছু দেশেও সংক্রমণের হার বাড়ছে।
অথচ করোনা টিকার ক্ষেত্রে ইউরোপ উল্লেখযোগ্য মাইলফলক ছুঁয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী এই মহাদেশে টিকার ১০০ কোটি ডোজ দেয়া হয়েছে। সংস্থার ইউরোপের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হান্স ক্লুগে বলেছেন, বিশাল এই সাফল্যের ফলে ইউরোপের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পুরোপুরি সুরক্ষা পেয়ে গেছেন। তবে তার মতে, বর্তমান সংকটের মোকাবিলা করতে হলে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ দেয়া জরুরি।
উল্লেখ্য, ডাব্লিউএইচও’র হিসাব অনুযায়ী ৫০টিরও বেশি দেশ ইউরোপীয় অঞ্চলের অন্তর্গত। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি তালিকায় তুরস্ক, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মতো দেশও রয়েছে। ব্রিটেন, রাশিয়া ও তুরস্কে সংক্রমণের হার আপাতত সবচেয়ে বেশি।
গোটা বিশ্বে করোনা সংক্রমণের হার কমতে থাকলেও একমাত্র ইউরোপেই এই ভাইরাস আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে। তিন সপ্তাহ ধরে এই অঞ্চলের অর্ধেকেরও বেশি দেশে লাগাতার আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সূত্র অনুযায়ী শুধু গত সপ্তাহে সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ছিল সাত শতাংশ। এর পরেই উত্তর আমেরিকার স্থান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের হার ১১ শতাংশ কমে গেলেও প্রায় পাঁচ লাখ ৮০ হাজার নতুন সংক্রমণ ঘটেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে ইউরোপে করোনা সংক্রান্ত বিধিনিয়ম শিথিল করার বিষয়ে বিতর্ক দেখা দিচ্ছে। জার্মানিতে নভেম্বরের শেষে জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হলেও মাস্ক ও দূরত্বের মতো কিছু কড়াকড়ি চালু থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফ্রান্সের সংসদ জরুরি অবস্থার মেয়াদ ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে