বিনোদন ডেস্ক;
তিনি বলিউডের ড্রিম গার্ল। বিখ্যাত ছবি ‘শোলে’র বাসন্তী! নাচ, অভিনয়, সংসার কিংবা রাজনীতি- যখন যে মাধ্যমে মন দিয়েছেন, হেমা মালিনী সেখানেই সফল হয়েছেন। আজ তার ৭৩তম জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন চিরসবুজ এ তারকা। তাকে নিয়ে লিখেছেন- জাহিদ ভূঁইয়া
শুভ জন্মদিন
হেমা মালিনী
লেখাপড়ায় গোল্লা
লেখাপড়ায় খুব একটা মনোযোগী ছিলেন না হেমা। দশম শ্রেণিতে উঠেই তিনি পড়াশোনা ছেড়ে দেন। ছোটবেলা থেকেই হেমা নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন, হয়তো এ কারণেই অন্য কিছুতে মনোযোগ দিতে চাননি।
ছোট্ট চরিত্র দিয়ে শুরু
‘তারকাসুলভ’ চেহারা ছিল না বলে ক্যারিয়ারের শুরুতে তামিল নির্মাতা সিভি শ্রীধরের ছবি থেকে বাদ পড়েছিলেন হেমা। পরে সেই চরিত্রে অভিনয় করেন জয়ললিতা। ১৯৬৫ সালে ‘পা-ব বনবাসাম’ ছবিতে একটি ছোট্ট চরিত্রের মাধ্যমে হেমার যাত্রা শুরু বলিউডে।
ড্রিম গার্ল খেতাব
১৯৬৮ সালে ‘স্বপ্ন কা সওদাগর’ ছবিতে মূল চরিত্রে অভিনয় করেন হেমা। এতে তিনি জুটি বাঁধেন রাজ কাপুরের সঙ্গে। ছবি মুক্তির পর থেকে সবাই হেমাকে হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পের ‘ড্রিম গার্ল’ বা ‘স্বপ্নের তরুণী’ নামে অভিহিত করেন। এর পর একে একে ‘শোলে’, ‘সীতা ঔর গীতা’, ‘মিরা’, ‘কিনারা’, ‘সন্ন্যাসী’, ‘মেহবুবা’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘প্রেম নগর’, ‘খুশবু’র মতো ছবি দিয়ে প্রমাণ করেন- তিনি ‘তারকাসুলভ’ কিনা!
সর্বাধিক উপার্জনকারী
বলিউডে তখন পুরুষ শাসন চলছে। একের পর এক অভিনেতার জয়জয়কার। সেই সময়ই শীর্ষ ১০ উপার্জনকারী অভিনয়শিল্পীর তালিকায় চলে আসেন হেমা। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে বলিউডের চতুর্থ সর্বাধিক উপার্জনকারী ছিলেন তিনি।
তুরুপের তাস
বাণিজ্যিকভাবে হেমার সাফল্য আসে আশি ও নব্বইয়ের দশকে। নায়কদের পাশাপাশি তিনিও ওই সময়ে পরিচালক-প্রযোজকদের তুরুপের তাস ছিলেন। হেমা অভিনীত ‘ক্রান্তি’, ‘নসীব’, ‘সত্তে পে সত্তা’, ‘এক নাহি পেহেলি’, ‘রামকালি’, ‘সীতাপুর কি গীতা’, ‘জামাই রাজা’, ‘আলিবাবা অউর ৪০ চোর’, ‘সম্রাট’, ‘আন্ধা কানুন’, ‘দরদ’, ‘কুদরত’, ‘হাম দোনো’, ‘রাজপুত’, ‘বাবু’, ‘দুর্গা’সহ বহু ছবি সুপারহিট হয়।
মা-বাবার অমতে বিয়ে
১৯৭০ সালে ‘তুম হাসিন ম্যায় জাওয়ান’ ছবির মধ্য দিয়ে প্রথমবার ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে জুটি বাঁধেন হেমা। এর পর তাদের একসঙ্গে দেখা গেছে অসংখ্য ছবিতে। সেই সূত্রে প্রেম। কিন্তু হেমার পরিবার কিছুতেই এ সম্পর্ক মেনে নেবে না। ওদিকে ধর্মেন্দ্রর সংসার আছে। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে ১৯৭৯ সালে বিয়ে করেন তারা। শোনা যায়, দুজনেই বিয়ের আগে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন।
ফ্যাশন আইকন
শুধু নাচ-অভিনয় দিয়েই নয়, হেমা দর্শককে মুগ্ধ করতেন তার অসাধারণ ফ্যাশন সেন্স দিয়েও। সত্তর দশকে নায়িকাদের বেলবটম প্যান্ট পরার চল তিনিই প্রথম শুরু করেন। সে সময় তরুণীদের মধ্যে এই ফ্যাশন জনপ্রিয় হয়।
সৌন্দর্যের রহস্য
হেমার সৌন্দর্যের রহস্য জানার আগ্রহ অনেকেরই। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, তার সৌন্দর্যের একমাত্র রহস্য পানি। প্রচুর পানি পান করে হেমা ত্বকের পরিচর্যা করেন।
শিল্পকলায় আগ্রহ
শিল্পকলার প্রতি বেশ আগ্রহ রয়েছে হেমার। নাট্যবিহার কলাকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। হেমা ছোট পর্দায়ও নিজের অভিনয় দক্ষতার ছাপ রেখেছেন। তবে অভিনয়ে সফল হলেও নাচই তার জীবনের মূলমন্ত্র।
রাজনীতিতেও সফল
১৯৯৯ সাল থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হেমা। ওই বছর ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করেন। ২০০৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০০৯ সাল পর্যন্ত এ অভিনেত্রী রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। ২০১০ সালে তাকে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়। চার বছর পর মথুরার জয়ন্ত চৌধুরীকে বিশাল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে লোকসভার সদস্য হন হেমা।