স্বদেশ ডেস্ক:
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আব্দুল মালেকের (৬৩) বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় আগামী ২০ সেপ্টেম্বর রায় প্রদানের দিন ধার্য করেছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রবিউল আলম মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় প্রদানের এদিন ঠিক করেন।
এদিন রাষ্ট্রপক্ষে ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মাদ সালাহউদ্দিন হাওলাদার ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহিদুর রহমান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর আসামি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে ন্যায় বিচার প্রার্থণা করেন।
প্রসিকিউটর সালাহউদ্দিন জানান, মামলাটি ঢাকার এক নম্বর মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ চার্জশিটের ১৩ জন সাক্ষীর ১৩ জনেরই সাক্ষ্যগ্রহণ করে গত ৬ সেপ্টেম্বর তাদের আদালতে অবশিষ্ট অংশ বিচারের জন্য পাঠান।
এর আগে চলতি বছর ১১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১ এ কর্মরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান চৌধুরী আদালতে এ আসামির বিরুদ্ধে এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর একই আদালত চলতি বছর ১১ মার্চ এ আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। গত ২৪ আগস্ট থেকে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
অবৈধ অস্ত্র, জাল নোট ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর ভোরে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে ড্রাইভার মালেককে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইলফোন উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় র্যাব অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুই মামলা দায়ের করেন। মামলাগুলোয় কায়েক দাফা রিমান্ড শেষে ওই বছর ৯ ডিসেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর থেকে সে কারাগারেই আছেন।
রাজধানীর তুরাগে গাড়িচালক আবদুল মালেকের রয়েছে ২৪টি ফ্ল্যাট বিশিষ্ট সাত তলার দুটি বিলাসবহুল বাড়ি। একই এলাকায় ১২ কাঠার প্লট। এছাড়া হাতিরপুলে ১০ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, অধিদপ্তরের কর্মচারী হলেও মালেক ছিলেন প্রভাবশালী। তিনি অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ, বদলি নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার কথামতো কর্মকর্তারা কাজ না করায় তাদের নানাভাবে হয়রানি বা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। মালেক একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হলেও নিজে ব্যবহার করতেন পাজেরো গাড়ি। এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যেসব চালকরা আছেন তাদের তেল চুরির টাকার বেশিরভাগই মালেকের পকেটে যেত। রাতারাতি বিপুল পরিমাণ টাকার মালিক বনে যান। এসব টাকা দিয়ে মালেক ঢাকা শহরে একাধিক আলিশান বাড়ি, ফ্ল্যাট এমনকি ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ টাকা রেখেছেন।