রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৭ অপরাহ্ন

সরকারি করোনা সুরক্ষাসামগ্রী পাচ্ছে না দেশের মানুষ

সরকারি করোনা সুরক্ষাসামগ্রী পাচ্ছে না দেশের মানুষ

স্বদেশ ডেস্ক: দেশে করোনা মহামারী শুরুর পর গত ১৮ মাসে কখনো ঊর্ধ্বমুখী, কখনো নিম্নমুখী হলেও মানুষ কবে নিস্তার পাবে তার ঠিক নেই। করোনার এ সময়ে মানুষের জীবনরক্ষায় সরকারের তরফ থেকে নানাভাবে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্ক ব্যবহার করার ওপর জোর দিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে সব মহল থেকে। এ ছাড়া করোনাকালে ঘরবাড়ি, অফিস-আদালত, এমনকি ব্যক্তিগত গাড়ি সুরক্ষিত রাখার জন্যও এক ধরনের অ্যান্টিসেপটিক ¯েপ্র বের করেছে বিভিন্ন কোম্পানি। ‘ইথানলে’র নামে ড্রামে ভর্তি কেমিক্যাল লিটারে লিটারে বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু জীবন রক্ষাকারী এসব করোনাসামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। নীল রঙের হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ২০০ মিলিলিটারের বোতল কিনে কিছুদিন ব্যবহারের পর ঘ্রাণ চলে গেছেÑ এমন অভিযোগও শোনা যায়। এমন বাস্তবতায় দেশের মানুষকে করোনাকালীন স্বল্পমূল্যে মানসম্মত সেবা দিতে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম)। প্রতিষ্ঠানটি করোনাসামগ্রীর পাশাপাশি করোনা উপসর্গ বহনকারীদের জন্য ‘ওরো-নজাল’ ড্রপও আবিষ্কার করে। তবে তাদের উৎপাদিত কোনো পণ্যসেবাই
পাচ্ছে না দেশের মানুষ। একই পণ্য অন্য কোম্পানির তুলনায় অন্তত অর্ধেক দামে এবং মানে শতভাগ ভালো হলেও স্বাস্থ্যখাতের অন্য প্রতিষ্ঠানের
অসহযোগিতার কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য অন্য প্রতিষ্ঠানের অসহযোগিতার কারণে মানুষ ঠকছে। দেশ ও দশের কল্যাণেই বিআরআইসিএম সম্প্রতি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস প্রতিরোধকসামগ্রী ‘জিরো ফাঙ্গাস স্প্রে’ উৎপাদন করেছে। এ ছাড়া এমন স্প্রে আবিষ্কার করেছে- যা মাত্র ৩০ মিনিটেই করোনা নেগেটিভ করতে সক্ষম। পরীক্ষায়ও যার প্রমাণ মিলেছে। অথচ করোনার নমুনা পরীক্ষার কীটসহ একই মানের পণ্য উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনের প্রতিষ্ঠানটি করোনা নিয়ন্ত্রণে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদন করছে। কিন্তু জনসাধারণের কাছে এগুলো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের করোনাসামগ্রীর মূল্য সাধারণের সাধ্যের মধ্যে। গুণগত মান নিয়েও কোনো প্রশ্ন নেই। অথচ মানুষকে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের সেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসব সামগ্রী ব্যবহার করা হলেও অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠান এসব ব্যবহার করছে না। এতে সমমানের পণ্য কিনতে সাধারণ মানুষের বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে। অন্যদিকে নিত্যনতুন জীবনরক্ষাকারী পণ্য উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। একইভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠান কেরু অ্যান্ড কোং-এর হ্যান্ড স্যানিটাইজার এখন বাজারেই নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন রাসায়নিক পরিমাপ বিষয়ে সেবা ও গবেষণাসংক্রান্ত সরকারের বিধিবদ্ধ সংস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশের শীর্ষ বিজ্ঞানী, রাসায়নিক গবেষকরা নমুনা পরীক্ষার কীট, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন করোনাসামগ্রীর সফল আবিষ্কার ও উৎপাদন করেছে। কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, র‌্যাব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ব্র্যাক, বেক্সিমকো ফার্মা, বিজিএমইএসহ দেশের খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানগুলো এটি ব্যবহার করছে। কোভিড-১৯ স্পেসিমেন/স্যাম্পলিং কালেকশন কীট চীন থেকে ৪৩০ টাকা মূল্যে কেনা হচ্ছে। এটা বাংলাদেশ সরকারের বিআরআইসিএম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাত্র ২৬৪ টাকায় দিতে সক্ষম। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সরকারি প্রতিষ্ঠানটি থেকে ২০ লাখ পিস নমুনা পরীক্ষা কীট নিয়েছে। এতে সরকারের ৫২ কোটি ৮০ লাখ টাকার সাশ্রয় হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এগুলো ব্যবহারে আগ্রহী হলেও আওতাধীন প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল মেডিসিন স্টোরস ডিপো (সিএমএসডি) বা কেন্দ্রীয় ঔষধাগার এসব সামগ্রী কিনছে না। সরকারের কোনো দপ্তরই এই প্রতিষ্ঠানটির মানসম্পন্ন স্বল্পমূল্যের সুরক্ষাসামগ্রী দেশের মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছানোর উদ্যোগ নিচ্ছে না। অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে সমমানের এসব পণ্য।
বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক ড. মালা খান বলেন, ‘উৎপাদন খরচে জনগণের হাতে আমরা এসব পণ্য তুলে দিতে সক্ষম। করোনা পরিস্থিতি সাময়িক কমলেও আবার কখনো কখনো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। দেশের এই সংকটকালে প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা না করে শুধু মানবসেবায় অংশ নিতে চায়। বিআরআইসিএমের এক কর্মকর্তা বলছেন, তাদের বক্তব্যÑ ‘গবেষণা করলেও বেতন হবে, না করলেও হবে। আমাদের সমস্যা কী? কিন্তু সরকার তাদের কাছ থেকে পণ্য নিলে সরকারের সাশ্রয় হবে। স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য কম দামে সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারবে। তারা স্বাস্থ্যঝুঁঁকিতে পড়বে না।’ এ ছাড়া তাদের উৎপাদিত পণ্যের চেয়ে উন্নতমানের পণ্য কেউ দেবে না। এক্ষেত্রে ‘জিটুজি’ চুক্তির মাধ্যমে এসব পণ্য কেনা হলে সরকারই লাভবান হবে। তবে কেন এসব পণ্য কেনা হচ্ছে না- এ বিষয়ে কেউই কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বিআরআইসিএম কর্মকর্তারা জানান, তারা তাদের উৎপাদিত করোনাসামগ্রী ইতোমধ্যেই মান পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। পরীক্ষায় এর কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। এমনকি আমদানি করা পণ্যের সঙ্গে প্রতিটি ক্ষেত্রে তুলনামূলক সফলতা এসেছে। এসব পণ্যসামগ্রী সাধারণের হাতে পৌঁছাতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন প্রয়োজন। জানা গেছে, ওরো-নজাল ড্রপের বাজারজাত করার জন্য অনুমোদন চেয়ে ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অনুমোদন প্রদানে বিলম্ব করা হচ্ছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, অনুমোদনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তারা প্রাথমিকভাবে পরিচালিত একটি ট্রায়ালের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে অধিদপ্তরের ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স কমিটির সদস্যরা পূর্ণাঙ্গ ট্রায়ালের তথ্য-উপাত্ত চেয়েছেন। ওই প্রতিবেদনগুলো সব শর্ত পূরণ করলে দ্রুতই অনুমোদন প্রদান করা হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মুশতাক আহমেদ বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের এসব পণ্য সিএমএসডি কিনবে। এসেনসিয়াল ড্রাগের কাছ থেকেও কিনছে। তালিকাভুক্ত হলে সরাসরি কিনবে এতে কোন বাধা নেই। সরকারি প্রতিষ্ঠান হলে অবশ্যই কিনবে। কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের সঙ্গে কথা বলা উচিত, সমস্যাটা কোথায়?’

স্যানিটাইজারের নামে কী ব্যবহার করছি?
করোনাকালীন এই কঠিন দুঃসময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে স্যানিটাইজারের নামে কী ব্যবহার করা হচ্ছে- তা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুযায়ী ইথানলজাতীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজারে আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল (আইপিএ) ৭৫ শতাংশ এবং বিশুদ্ধ ইথানল থাকতে হয় ৮০ শতাংশ, যা বিআরআইসিএম উৎপাদিত ‘ইথানল হ্যান্ড স্যানিটাইজারে’ রয়েছে। সরকারি এ সংস্থা বাজারে থাকা দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্যানিটাইজারসহ অন্যান্য করোনাসামগ্রীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। স্যানিটাইজারসহ বেশিরভাগ পণ্যে মাত্রাতিরিক্ত বা মাত্রানিম্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি পেয়েছে। আবার বেসরকারিভাবে উৎপাদিত কিছু হ্যান্ড স্যানিটাইজারে অতিরিক্ত লাভের আশায় ইথানলের বদলে মিথানল দেওয়া হয়েছে, যা অহরহ বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বিআরআইসিএমসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইথানলের বদলে মিথানল দেওয়া হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে ক্যানসার হতে পারে। এতে ক্যানসারের উপাদান থাকে। সম্প্রতি এসিআই উৎপাদিত পণ্যে ইথানলের বদলে মিথানল শনাক্ত করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর পর এসিআইকে জরিমানা করা হয় এবং ওইসব পণ্য বাজার থেকে তুলে নিতে নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বিআরআইসিএমের ওয়েবসাইটে উৎপাদিত সুরক্ষাসামগ্রীসমূহ : কোভিড-১৯ স্পেসিমেন কালেকশন কিট- ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়াম (ভিটিএম)। কোভিড ১৯-এর নির্ভরযোগ্য পরীক্ষার জন্য সঠিক পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহে আমেরিকার ফর্মুলা অনুযায়ী স্পেসিমেন কালেকশন কিট- ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়াম (ভিটিএম)। এই কিটে আছেÑ ১. সঠিকভাবে নমুনা সংরক্ষণের অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান সমন্বয়, ২. নাক ও মুখগহ্বরের জন্য দুটি সোয়াব স্টিক, ৩. একটি টাং ডিপ্রেসর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে এর ২০ লাখ কিট সারাদেশে ব্যবহৃত হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, র‌্যাব হেডকোয়ার্টার্স, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার, বারডেম হাসপাতাল, বাংলাদেশ ইনস্টিটিইট অব হেলথ সায়েন্স জেনালের হাসপাতাল, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্র্যাক, নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, ওএমসি হেলথকেয়ার প্রা.লি., বিজিএমইএ, বায়োটেক কেয়ার লি. ন্যাশনাল টিবি প্রোগ্রামসহ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এর মূল্য মাত্র ১৬৬ টাকা।
স্যাম্পল স্টোরেজ রি-এজেন্ট : রুম টেম্পারেচারে সংরক্ষণযোগ্য ‘স্যাম্পল স্টোরেজ রি-এজেন্টে’ আছেÑ ১. নমুনা সংরক্ষণের জন্য সল্ট, কায়োট্রপিক এজেন্ট, গ্লিসারল; ২. নাক ও মুখগহ্বরের জন্য দুটি সোয়াব স্টিক। এর মূল্য ৮০ টাকা।
বি ক্লিন হ্যান্ডরাব/হ্যান্ড স্যানিটাইজার : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফর্মুলা অনুযায়ী সঠিক মাত্রায়, অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল (আইপিএ) সহযোগে যথাযথ মান নিশ্চিত করে প্রস্তুতকৃত ‘বি ক্লিন হ্যান্ডরাব’, যা হাত সম্পূর্ণরূপে জীবাণুমুক্ত করার জন্য ব্যবহারোপযোগী। করোনা মহামারীর প্রথম ৬ মাস অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর ৬টি সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন বিনামূল্যে ১৫ লিটার করে হ্যান্ডরাব স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থা এবং ব্যক্তিপর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে।
অটোমেটিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ডিসপেনসিং ডিভাইস : স্পর্শ ছাড়াই হাত জীবাণুমুক্ত করতে এটি ব্যবহারোপযোগী। এক লিটার ধারণক্ষমতার এই ডিভাইসে বি ক্লিন হ্যান্ডরাব/ স্যানিটাইজার ব্যবহৃত হয়। হাত ডিভাইসের নিচে স্থাপন করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট পরিমাণে স্প্রে হয়। এর মূল্য ৬ হাজার ৫শ টাকা।
বি ক্লিন ডিসইনফেকট্যান্ট : অস্ট্রেলিয়ার সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোলের (সিডিসি) সুপারিশ করা পদ্ধতিতে যথাযথ মান নিশ্চিত করে এটি প্রস্তুত করা। যা ঘরের মেঝে, রাস্তাঘাটসহ যে কোনো নন লিভিং সারফেস জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবহারোপযোগী। এর প্রতি ৫ লিটারের মূল্য ৪০০ টাকা।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসেফ ওরো-নজাল স্প্রে : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বিআরআইসিএমের যৌথ উদ্যোগে উদ্ভাবিত করোনা ভাইরাস ধ্বংসকারী ওরো-নজাল স্প্রে। নির্দিষ্ট সময় পরপর এই স্প্রে দুই নাকে ও মুখগহ্বরে ব্যবহার করলে ন্যাসোফ্যারিংস ও ওরোফ্যারিংসে অবস্থানকারী ভাইরাস ধ্বংস হয়। ফলে সংক্রমণের মাত্রা এবং স্বাস্থ্যঝুঁঁকি কমে যায়। বর্তমানে এর ক্লিলনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এর প্রতি ২০ মিলিলিটারের প্রস্তাবিত মূল্য ১০০ টাকা।
করোনা রোগীদের ওপর পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে, অন্তত ৮৫ ভাগ করোনা রোগী স্প্রে ব্যবহার করে নেগেটিভ হয়েছেন। তিনটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৪৮৮ জন রোগীর ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। তারা সবাই করোনা পজিটিভ ছিলেন। তবে পজিটিভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বি আরআইসিএমের ‘বঙ্গসেফ ওরো-নজাল’ স্প্রে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। এর আধা ঘণ্টার মধ্যেই তাদের করোনা পরীক্ষা করা হয় এবং তাদের করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে।
বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক ড. মালা খান বলেন, এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন ‘বালাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) দাখিল করেছেন। গত ২২ মে দাখিল করা রিপোর্টের সঙ্গে রোগীদের ওপর পরিচালিত সমুদয় তথ্য-উপাত্ত সংযুক্ত করা আছে। রিপোর্টে ৪৮৮ জন করোনা পজিটিভ রোগী ছাড়াও ১০ জন সুস্থ-সবল মানুষের ওপর স্প্রে প্রয়োগ করা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কিনা তা নিশ্চিত হতেই দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা চালানো হয়। সেখানে ওই ১০ জনের মধ্যে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তিনি বলেন, এখন তাদের কাছ থেকে অনুমতি পেলে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদনে যেতে পারব।
ইউভিসি ডিজিনফেকশন চেম্বার : করোনা ভাইরাসসহ সব ধরনের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতি জীবাণু ধ্বংসকারী ২৫৪ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে ইউভিসি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রস্তুত করা এই ডিজিনফেকশন চেম্বারে রক্ষিত নথিপত্র, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল, চাবি, চশমা ইত্যাদি তিন মিনিটে জীবাণুমুক্ত হবে। প্রকারভেদে এর মূল্য ৪৪ হাজার থেকে ৫৫ হাজার টাকা।
ইউভিসি ডিজিনফেকশন কনভেয়র ক্যাবিনেট : করোনা ভাইরাসসহ সব ধরনের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতি জীবাণু ধ্বংসকারী ২৫৪ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে ইউভি-সি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রস্তুত করা এই ডিজিনফেকশন কনভেয়র ক্যাবিনেটে রক্ষিত খাদ্যসামগ্রীর (যেমন- শাকসবজি, ফলমূল, তৈরি খাবার প্রভৃতি) স্বাদ, গন্ধ, বর্ণ ও প্রকৃতি অপরিবর্তিত রেখে তিন মিনিটে জীবাণুমুক্ত হবে। এর সেবাগ্রহীতা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এর মূল্য ২ লাখ টাকা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877