স্বদেশ ডেস্ক:
মানুষের অন্তর সদা পরিবর্তনশীল। কখনও ভালো কাজের কথা চিন্তা করে, কখনও খারাপ কাজের কল্পনা করে।
অন্তর যেন কখনও খারাপের প্রতি পরিবর্তিত না হয়, বরং সবসময় আল্লাহর আনুগত্যের ওপর স্থির থাকে, খারাপ থেকে ভালোর দিকে পরিবর্তিত হয়- সেজন্য আল্লাহর কাছে নিয়মিত দোয়া করতে হবে।
মানুষের অন্তর যখন ঠিক হয়ে যায় তখন তার পুরো দেহ ঠিক হয়ে যায়। কারণ অন্তর হচ্ছে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রাণী, সে যেভাবে চাবে সেভাবেই হবে। আর যদি এর ব্যতিক্রম হয় তার অন্তর নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এই অসুস্থতা ধীরে ধীরে তার শরীরের রন্দ্রে রন্দ্রে ছড়িয়ে যায়।
গোটা দেহ তার অকেজো হয়ে যায়। তখন সে ভালো জিনিস উপলব্ধি করার বোধ শক্তি হারিয়ে ফেলে। কোরআন ও হাদীসের বাণী শোনালে তার মাঝে কোন পরিবর্তন ঘটেনা। দিকভ্রান্ত হয়ে বিভিন্ন দিকে ছুটে বেড়ায়। তখনই কিছু মানুষ প্রশান্তি খুঁজে বেড়ায় নেশার মাঝে।
এর মাধ্যমে ভুলে থাকতে চায় সব ব্যাথা-বেদনার রথী-মহারথী। আর এভাবে সুস্থ জীবনটাকে নিজ হাতে টেনে নিয়ে যায় মরণ-পথে। প্রশান্তির পরিবর্তে ঘরে ফিরে আনে অশান্তি।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পবিত্র কোরআনে কারিমের একটি আয়াত নিয়মিত তেলাওয়াত করা যেতে পারে। বুজুর্গরা বলেছেন, তাতে মনে স্থিরতা আসবে।
আয়াতটি কোরআনে কারিমের সূরা হুদের ১১২ নম্বর আয়াত। আয়াতটি হলো-
فَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ وَمَنْ تَابَ مَعَكَ وَلَا تَطْغَوْا إِنَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
উচ্চারণ: ‘ফাসতাকিম কামা উমিরতা- ওয়ামান তাবা মাআকা, ওয়ালা তাতগাও ইন্নাহু বিমা তা’মালুনা বাসির। ’
অর্থ : সুতরাং (হে পয়গম্বর) তোমাকে যেভাবে আদেশ করা হয়েছে তাতে (সরল পথে) দৃঢ়ভাবে অবস্থান করো, তুমি এবং তোমার সঙ্গে যারা (আল্লাহর প্রতি) ঈমান এনেছো (সবাই, সঠিক পথ থেকে) সীমালংঘন করো না। তোমরা যা করো তিনি (আল্লাহ) তা ভালোভাবেই দেখেন।
প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর বর্ণিত আয়াতখানা ১১ বার করে পাঠ করলে ইনশাআল্লাহ মনের অস্থিরতা দূর হবে। অন্তরে প্রশান্তি মিলবে।
রাসুল (সা.) এ বিষয়ে আরেকটি উপকারী দোয়া শিখিয়েছেন- “اللهم مصرف القلوب صرف قلوبنا على طاعتك”
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা মুসররিফাল কুলুবি সররিফ ক্বুলুবানা আলা ত্ব-আতিক।’
অর্থ: ‘অন্তরগুলো পরিচালনাকারী হে আল্লাহ, আপনি আমাদের অন্তরকে আপনার আনুগত্যের ওপর স্থির রাখুন।’
আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আদম সন্তানের অন্তরগুলো পরম দয়াময় (আল্লাহ তাআলা)-এর দুই আঙুলের মাঝে একটি মাত্র অন্তরের মতো। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তা ওলটপালট করেন। এরপর রাসুল (সা.) এই দোয়া পড়েন। (মুসলিম, হাদিস : ৬৫০৯)