স্বদেশ ডেস্ক;
‘পালাতে হয়নি দাদা তাড়িয়েছে’, অঞ্জন দত্তের গীতচরিত্রটির মতোই হাল আমেরিকার। অন্তত তা-ই মনে করে রাশিয়া। সেই স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকে শত্রুতা। আফগানিস্তানে অভিযান শেষে ‘ঘরে ফেরা’র যে দাবি করেছে ওয়াশিংটন, মস্কো কি বিনাপ্রতিবাদে তা মেনে নেয়? বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, রুশ গণমাধ্যমগুলো বলছে, তালেবানের কাছে তাড়া খেয়ে পালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। অঞ্জন দত্তের গানের বালকটি বাড়ি ছেড়েছিল ‘ডিসেম্বর মাসে’, আমেরিকা আরও আগে- আগস্ট ফুরোবার আগেই।
বিবিসি বলছে, তালেবান কাবুল দখল করে ‘বিজয়’ ঘোষণার দুদিন পর আফগানিস্তানে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমেরিকাকে দায়ী করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রাশিয়ার সংবাদপত্রগুলো।
রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক রসিইসকায়া গেজেটায় পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক ফিয়োদোর লুকিয়ানফ দেশটির ঘটনাবলিকে এক ‘?চরম বিশৃঙ্খলা’ বলে বর্ণনা করে বলেছেন, ‘মার্কিন মদদপুষ্ট প্রশাসন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। আমেরিকানরা ঘরে ফেরেনি, তারা পালিয়েছে।’
বিবিসির মস্কো প্রতিনিধি স্টিভ রোজেনবার্গ টুইটারে সংবাদপত্রগুলোর পর্যালোচনা করে বলছেন, “পত্রিকাগুলোর শিরোনাম হয়েছে মূলত এ রকম, ‘একটা চরম বিশৃঙ্খলা’, ‘পশ্চিমা বিশ্ব এবং জো বাইডেনের জন্য পাহাড়-প্রমাণ রাজনৈতিক অপমান।’”
একটি পত্রিকা এমন প্রশ্নও তুলেছে, ‘রাশিয়াকে কি এখন আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠাতে হবে?’ আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো গতকাল মঙ্গলবার এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার বিষয়টি নজরে এলো।
এদিকে আফগানিস্তানে মস্কোর রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি ঝিরনভ মন্তব্য করেছেন, কাবুল দখলের পর তালেবান প্রথম ২৪ ঘণ্টায় শহরটিকে যতটা নিরাপদ করে তুলেছে, আফগানিস্তানের আগের প্রশাসনের অধীনে রাজধানী এতটা নিরাপদ ছিল না বলে মনে হচ্ছে তার।
তালেবানরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের সহযোগী দেশগুলোর কর্মীরা রাজধানী ছাড়তে শুরু করলেও রাশিয়া, চীন ও ইরান ইঙ্গিত দিয়েছে, কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের আফগানিস্তান ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। তালেবানদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। তবে তালেবানকে শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো তাড়া আপাতত নেই।
প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের বিশেষ প্রতিনিধি কাবুলে রুশ দূতাবাসের মাধ্যমে তালেবান নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সরকারের পতন ও রাজধানী কাবুল তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পরদিন রাশিয়ার পক্ষ থেকে এমন কথা জানানো হয়। পুতিনের বিশেষ প্রতিনিধি জমির কাবুলভ রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের দূতাবাস কর্তৃপক্ষ আমাদের দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্থায়ী প্রক্রিয়া তৈরির জন্য তালেবানের শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারা বিশেষভাবে নিযুক্ত প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রাখবে।’