শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন

কৌশলী তালেবান

স্বদেশ ডেস্ক:

তালেবানরা আফগান রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। আগের দিনের মতো গতকালও কাবুলের বিমানবন্দরে ছিল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি; রাস্তা ছিল সুনসান। তালেবানের পক্ষ থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করার কথা বললেও লুটপাটের ভয়ে দোকান খুলছেন না ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে জনমনে আস্থা ফেরাতে বেশ কিছু কৌশল নিয়েছে তালেবানরা। এর মধ্যে নারীদের সরকারে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সাবেক সরকারের কর্মীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে। টেলিভিশনের পর্দায় দেখা গেছে নারীদের উপস্থিতি। খবর বিবিসি ও রয়টার্স, আল জাজিরা।

এদিকে কাবুল দখলের পর গতকাল মঙ্গলবার প্রথম সংবাদ সম্মেলন করে তালেবান নেতারা। গোষ্ঠীটির মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ চলমান নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবও দেন। সংবাদ সম্মেলনে এই প্রথম তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলেছেন। সংবাদমাধ্যম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা আমাদের ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দেবেন কিন্তু শরিয়াবিরোধী কোনো খবর প্রচার করা যাবে না। এ ছাড়া বেসরকারি গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ

করতে পারবে বলেও জানান তিনি। নারী অধিকার নিয়ে তিনি বলেন, আমরা নারীদের অধিকারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তা শরিয়াহভিত্তিক হতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্য আমরা রাখব না।

রাজধানী কাবুলে প্রবেশ নিয়ে তালেবান মুখপাত্র বলেন, আমরা কাবুলের প্রবেশপথে অবস্থান নিতে চেয়েছিলাম। ক্ষমতা হস্তান্তর যেন মসৃণ হয় সেই প্রচেষ্টা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আগের সরকার অনেক কাজ অসম্পূর্ণ রেখেছে। তাদের বাহিনী কোনো ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেনি। এর পর কাবুলের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্যই আমরা রাজধানীতে প্রবেশ করেছি। সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে ক্ষমার কথাও বলেন জাবিউল্লাহ। এ নিয়ে তিনি বলেন, কে কার পক্ষে কাজ করেছে এ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা হবে না। আমরা স্থিতিশীলতার পক্ষে কাজ করতে চাই। সরকার গঠন নিয়ে এ তালেবান নেতা বলেন, আরা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি, সময় হলে জানাব।

এর আগে তালেবান নেতারা এক ঘোষণায় সরকারি সব কর্মকর্তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি সব কর্মকর্তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হচ্ছে, তাই আপনারা পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আপনাদের স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে পারেন।

এদিকে আফগানিস্তানে সব পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। গত সোমবার ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠক করে। সেখানে এক বিবৃতিতে অবিলম্বে সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। এ দিকে পদচ্যুত ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ নিজেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দাবি করেন। বিবৃতিতে সব পক্ষের অংশগ্রহণে ও প্রতিনিধিত্বমূলক এবং নারী উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়। এমন প্রেক্ষাপটে যে তালেবান এতদিন নারীর অধিকার লুণ্ঠন করেছে সেই গোষ্ঠীটি এবার সরকারে নারীদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য ইনামুল্লাহ সামানগানি এ আহ্বান জানান। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, নারীরা ক্ষতির শিকার হোক তালেবান শাসন তা চায় না। শরিয়াহ আইন অনুযায়ী সরকারে তাদের উপস্থিতি থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন সামানগানি। তিনি আরও বলেন, এখনো সরকার কাঠামো পরিষ্কার নয় কিন্তু এখানে পুরোপুরি ইসলামিক নেতৃত্ব থাকবে। যদিও তালেবান দখলের নেওয়ার পর একটি ব্যাংক থেকে ৯ নারী কর্মীকে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। ওই নারী কর্মীদের বলা হয়ে ছিল, তাদের পরিবর্তে কোনো পুরুষ আত্মীয় যেন কর্মস্থলে প্রেরণ করে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877