শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৩ অপরাহ্ন

সু চির বিচার শুরু

স্বদেশ ডেস্ক:

মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির বিচার শুরু হলো। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সেনাবাহিনী উৎখাত করার চার মাস পর গতকাল সোমবার বিচার প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। জাতীয় নির্বাচনে প্রচারে সু চি লাইসেন্স বিহীন ওয়াকিটকি ব্যবহার করেছেন- সেনাবাহিনীর এমন অভিযোগে ৭৫ বছর বয়সী এই নেত্রী বিচারের মুখোমুখি হলেন। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের।

এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো এই বিচারকে সম্পূর্ণ অবৈধ বলে আখ্যা দিয়েছে। ভবিষ্যতে সু চিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখাই এই মামলার লক্ষ্য বলে বর্ণনা করছে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো। সু চির আইনজীবী খিন মং জ গতকাল জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাক্ষীদের বয়ান যাচাই করবেন তিনি। যদিও সু চির সঙ্গে আইনজীবীদের যোগাযোগও সীমিত করা হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানে সু চিকে বন্দি করার পর মাত্র দুবার তিনি আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছেন।

গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, রাজধানী নেপিদোর কাউন্সিল ভবনের বন্ধ কক্ষে সু চির বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে সু চিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিচার কক্ষে কোনো সাংবাদিকের প্রবেশাধিকার ছিল না। আইনজীবী খিন ‘পরিস্থিতি সুবিধার নয়’ বলে জানান। এ ছাড়া সু চি দাঁতে ব্যথা পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।

বিবিসির খবরে বলা হয়, সু চির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের আরেকটি অভিযোগের বিচার আজ ১৫ জুন শুরু হতে যাচ্ছে। এই মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হলে তার ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে সু চির বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে- যাতে বলা হয়, সু চি ১১ কেজি স্বর্ণ অবৈধভাবে গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে সু চির আইনজীবী খিন মং জ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, মূলত তার (সু চি) সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য এসব করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব অভিযোগ ‘হাস্যকর’ বলেও বর্ণনা করেছেন তিনি।

একদিকে আদালতে সু চির বিচার চলছে অন্যদিকে একই সময় দেশটির গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা গতকাল প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন। প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় প্রতিবাদী জনগণ ‘বিপ্লবী যুদ্ধ, আমরা অংশ নিচ্ছি’ বলে স্লোগান দেয়। কিছু আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, তারা সোমবার চে গুয়েভারার জন্মদিনে ধারাবাহিক ধর্মঘট ও প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করেছেন। লাতিন আমেরিকান বিপ্লবী চে তার মৃত্যুর পর বিপ্লবের আন্তর্জাতিক প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।

মিয়ানমারজুড়ে সহিংসতা তীব্র হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেত সেনাবাহিনীর ভারী অস্ত্র ব্যবহারের নিন্দা করেছেন। তবে জান্তা সরকার এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকেই সেনাবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত ৮ শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া কয়েক হাজার আন্দোলনকর্মীকে জেলে পুরেছে জান্তা সরকার। আর যে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থান করেছে সেই নির্বাচনে কোনো ধরনের কারচুপির আলামত পায়নি স্বাধীন পর্যবেক্ষক সংস্থা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877