স্বদেশ ডেস্ক:
সীমান্তের জেলাগুলোয় করোনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রায় প্রতিটি জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন জেলায় শনাক্তের হার ৫০ শতাংশের ওপরে রয়েছে। এ ছাড়া মোংলা উপজেলায় ৫১ এবং রামপালে ৭২.৭২ শতাংশ করোনা শনাক্ত হয়েছে। তিন জেলা রাজশাহী, নোয়াখালী ও খুলনায় আরও সাত দিন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এসব জেলায় লকডাউন বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়েছে। করোনার সার্বিক অবস্থা জানিয়েছে আমাদের সময়ের প্রতিনিধিরা।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে মহানগর এলাকায় ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানসহ প্রচার চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই মহানগর এলাকার জনগণকে কঠোর এই লডকাউন বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এ ছাড়া লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনকে শুক্রবার সকাল থেকে চলমান বিধিনিষেধ জোরদার করার পাশাপাশি নানা ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে। এরই অংশ হিসেবে লকডাউন সম্পর্কে অবহিত করতে মাইকিং করে সবাইকে জানানোসহ বিধিনিষেধ না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়। এদিকে সর্বাত্মক এই লকডাউন বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক। সপ্তাহব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউন শুরুর প্রাক্কালে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫টায় মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে লকডাউন বাস্তবায়ন কর্মসূচি সম্পর্কে আলাপকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে প্রজ্ঞাপন জারি করেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল জলিল। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে ১৭ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকার সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, বিপণিবিতান, দোকান, রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে। তবে ওষুধ, কাঁচাবাজার, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন ও সৎকারের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান এই লকডাউনের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
রাজশাহী নগরে লকডাউন ঘোষণার পর রাত থেকেই রাজশাহী মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকে ব্যাপকভাবে প্রচার চালানো হয়। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, রাত থেকেই লকডাউনের বিষয়ে বিধিনিষেধগুলো মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পুলিশ মাইকিং করে। নগরে এই সাত দিন কী করা যাবে আর কী করা যাবে না, সে বিষয়ে মানুষকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এই প্রচার আরও ব্যাপকভাবে চালানো হয়।
উল্লেখ্য, রাজশাহীতে ঈদের পর থেকে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর হারও। ৪ জুন রাজশাহী মেডিক্যালে সর্বোচ্চ ১৬ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৬ জনই ছিলেন রাজশাহীর বাসিন্দা। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জনই রাজশাহীর বাসিন্দা। জেলায় করোনা শনাক্তের হারও কয়েকদিন থেকে ৫০ শতাংশের কাছাকাছি।
নাটোর প্রতিনিধি জানান, আগের দিন সংক্রমণের হার কমে এলেও গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ আবার বৃদ্ধি পেয়েছে। নাটোর সদর ও সিংড়া পৌরসভায় চলমান লকডাউনের তৃতীয় দিনেও মাঠে পুলিশের তৎপরতা ছিল।
আগের দিন আক্রান্তের হার ৩৪ ভাগ থাকলেও ২৪ ঘণ্টায় তা বেড়ে ৫৩ ভাগ হয়েছে। ১৫৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ৮২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সদর উপজেলায় সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৮২ জনের মধ্যে ৫৯ জনই সদর উপজেলার। এ ছাড়া নাটোর সদর হাসপাতালে করোনার রোগীদের জন্য ৩১ বেড থাকলেও বর্তমানে এখানে ভর্তি রয়েছে ৪৩ জন।
অন্যদিকে লকডাউনের তৃতীয় দিন শুক্রবারে পুলিশের তৎপরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। নাটোর শহরের প্রবেশের ১২টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশ। নাটোর সদর হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। বিকালে একটি গ্রুপের পক্ষ থেকে ২০টি সিলিন্ডারের মাধ্যমে বিনামূল্যে ৭৫ কিউবিক মিটার অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়েছে।
নড়াইল প্রতিনিধি জানান, জেলায় করোনা সংক্রমণ আবার বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫১ জন আক্রান্ত (পজিটিভ) হয়েছেন। এর মধ্যে নড়াইল সদরে ৩৬ জন, লোহাগড়া উপজেলায় ১২ জন এবং কালিয়া উপজেলায় ৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার শতকরা ৫০ দশমিক ৮৬ ভাগ। গত ১ থেকে ৯ জুন পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তের হার ছিল শতকরা ১৬ ভাগ। এ ছাড়া সদর হাসপাতালের ৩ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আজ জেলা কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করেছেন কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিুর রহমান।
সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আকতার এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দেশের উচ্চহারে সংক্রমিত বিভিন্ন জেলা থেকে গণপরিবহন নড়াইলে আসছে। পাশর্^বর্তী দেশ ভারত থেকে গোপন পথে নড়াইলের নাগরিকরা বাড়িতে ফিরছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া মাস্ক ব্যবহার না করায় সংক্রমণের হার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও করোনাবিষয়ক জেলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে। জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শনিবার জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এলাকাভিত্তিক লকডাউনের ঘোষণা হতে পারে।
নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নোয়াখালী পৌরসভা ও সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে চলমান লকডাউনের সময়সীমা আরও সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। এবার সিএনজি ও অটোরিকশাসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ৫ জুন শনিবার থেকে এ এলাকাগুলোয় সাত দিনের লকডাউন শুরু হয়। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করেন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার। নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানান, করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণে চলমান লকডাউনের সময়সীমা আরও সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১৮ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর থাকবে।
লকডাউন চলাকালীন দূরপাল্লার বাস চৌমুহনী চৌরাস্তা অতিক্রম করতে পারবে না। কাঁচাবাজার খোলা থাকবে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। শর্তসাপেক্ষে খোলা থাকবে খাবার হোটেলও। তবে হোটেলে বসে খাবার খাওয়া যাবে না।
খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে জেলাব্যাপী এক সপ্তাহের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে বিকাল ৫টার কোনো দোকান, শপিংলমল, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি খোলা রাখা যাবে না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবে না। এই বিধিনিষেধ কাল রবিবার ১৩ জুন থেকে কার্যকর হবে।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে শুক্রবার তার সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। সভায় খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয় খুলনা করোনা রোগীর চিকিৎসার শয্যাসংখ্যা বাড়ানো হবে সে ক্ষেত্রে সদর হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্টের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে অতিসত্বর যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে একটি আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন ৫শ রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা যাবে।
সভায় আরও জানানো হয়, স্বাস্থ্যবিধি মানাতে গত সাত দিনে ২শ ২৩টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৫শ ৪৫ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ধরনের মোবাইল কোর্ট পরিচলনা অব্যাহত থাকবে।
সভায় খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. ইকবাল হোসেন, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহবুব আলম সোহাগ, সরকারি কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, লকডাউনের মধ্যেও কমছে না করোনা সংক্রমণ। চিকিৎসক সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে হাসপাতালগুলোয়। এদিকে সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২১১টি নমুনা পরীক্ষায় আরও ১১১ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। শতকরা হারে যা ৫৩ শতাংশ। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ৫০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং ৫ জন উপসর্গে মারা গেছেন। করোনায় এ পর্যন্ত জেলায় মারা গেছেন ৫০ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২৪৪ জন। এদিকে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ২৫৬ জন। জেলায় বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রয়েছেন ৬৪৭ জন। দুই সরকারি হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫৯ জন।
শয্যা সংকট না থাকলেও জনবল সংকট রয়েছে ব্যাপক। সীমিত জনবলে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খুদা বলেন, ৫৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ৩১ জন। তার মধ্যে অনেকেই আছেন অসুস্থ। অচিরেই চিকিৎসক নিয়োগ না দিলে স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খেতে হবে আমাদের।
এদিকে, সাতক্ষীরায় প্রথম দফা লকডাউনের মেয়াদ শুক্রবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। এ মেয়াদ আরও ৭ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত করোনা প্রতিরোধ ভার্চুয়াল বৈঠকে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সাতক্ষীরার তালা ও কলারোয়া উপজেলায় ২১টি ইউপি নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, প্রতিদিন ৬ থেকে ১০ জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, কুড়িগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। সীমান্তে ভুরুঙ্গামারী সোনাহাট স্থলবন্দর ও রৌমারী তুরা স্থলবন্দরে স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন।
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৪ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। যা আক্রান্তের হার ২৯.৯৩ শতাংশ। এ সময়ে সদরে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, গতকাল শুক্রবার করোনা হটস্পট মোংলায় সংক্রমণের হার কমলেও ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছে। আগের দিন ৬১. ২২ ভাগ থেকে কমে ৫০. ৯৮ ভাগে দাঁড়িয়েছে। তবে একই দিন মোংলার পার্শ্ববর্তী উপজেলা রামপালে শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২.৭২ শতাংশে। জেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ জন। এর মধ্যে মোংলা উপজেলায় ২৬ জন, রামপালে ১৬, সদর উপজেলায় ৯, মোরেলগঞ্জে ২ ও শরণখোলা উপজেলায় ২ জন রয়েছেন। শুক্রবার বাগেরহাট জেলায় গড় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৪২ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস জানান, আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর মোংলা হাসপাতালে নেই কোনো আইসিইউ বেড, হাইফো ন্যাজেল ক্যানেলা ও সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা। ইতোধ্যে করোনা চিকিৎসায় দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সংকট। এ অবস্থায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগকে। যেসব করোনা রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে, তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে।
মাগুরা প্রতিনিধি জানান, মাগুরায় আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। সন্দেহভাজন রোগী ও শনাক্তের সংখ্যা বিবেচনায় গত মে মাসের তুলনায় চলতি জুন মাসের প্রথম ১০ দিনেই আক্রান্তের হার প্রায় তিনগুণ। জুনের প্রথম ১০ দিনে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ জন। এদিকে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জেলা প্রশাসক।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ১০ দিনে সন্দেহভাজন ৩২৭টি নমুনা পরীক্ষার ফল পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৪৪ জন করোনা পজিটিভ। শনাক্তের হার প্রায় ১৪ শতাংশ।