স্বদেশ ডেস্ক: রাজধানীতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, প্রতিদিন দেড়শজনের বেশি মানুষ এ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯৩৮ জন। ডেঙ্গু জ্বর অস্বভাবিক মাত্রায় বাড়তে থাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্কও বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এপ্রিল থেকে অক্টোবর ডেঙ্গুরোগ ছড়ানোর বাহক এডিস মশার উপদ্রব বাড়ে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি এডিস মশার প্রজননের জন্য উপযোগী। এডিস মশার বংশবিস্তার ঠেকাতে বাড়ির আশপাশসহ পানি জমে থাকা স্থানগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে।
জানা গেছে, দেশের সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৪৭টি হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু রোগীর তথ্য সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর বাইরেও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বারে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন, তার হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে থাকে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের তথ্যানুযায়ী চলতি মাসের ১ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২ হাজার ১৬৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। যেখানে এর আগের মাসে অর্থাৎ জুন মাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৭৫৯ জন। এ ছাড়া চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৪ হাজার ২৪৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৩৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮ জন, মার্চে ১৭ জন, এপ্রিলে ৫৮ জন, মেতে ১৯৩ জন, জুনে ১৭৫৯ জন এবং জুলাইয়ে ২১৬৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল বিআরবি হসপিটাল লিমিটেডে একজন, ২৯ এপ্রিল আজগর আলী হাসপাতালে একজন ও ৩ জুলাই স্কয়ার হাসপাতালে ১ চিকিৎসকসহ মোট ৩ জন মারা গেছেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বয়স্ক মানুষের সংখ্যাই বেশি। আক্রান্তদের ৯০ শতাংশের বেশি রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না। যারা প্রথমবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে তাদের থেকে যারা দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের জটিলতা ও মৃত্যুঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া যাদের উচ্চরক্তচাপ, কিডনি রোগ ও লিভার রোগ রয়েছে, তাদেরও ডেঙ্গুজ্বরে মৃত্যুঝুঁকি বেশি। এ ধরনের রোগীর খুবই সর্তক থাকতে হবে। তিনি সাধারণ মানুষের পাশপাপাশি সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের পদক্ষেপ জোরদার করার আহ্বান জানান।