স্বদেশ ডেস্ক:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করে ইতিহাসে ঘৃণিত ব্যক্তির প্রথম সারিতে রয়েছেন জার্মান একনায়ক এডলফ হিটলার। এবার তার ৪৮ বাক্স গুপ্তধনের সন্ধান পাওয়া গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ৫০ কোটি পাউন্ড। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা!
এমনই দাবি করেছেন গুপ্তধন শিকারিরা। তাদের দাবি, দক্ষিণ পোল্যান্ডের মিনকওস্কিইয় প্রাসাদেই লুকিয়ে রাখা রয়েছে হিটলারের এই গুপ্তধন। ১৮ শতকে তৈরি হওয়া এ প্রাসাদটি বানিয়েছিলেন সাবেক প্রুসিয়ার জেনারেল ফ্রেডরিচ উইলহেম ভন সেদলিজ। বর্তমানে এটি সিলেসিয়ান ব্রিজ ফাউন্ডেশনের অধীন। এই সংস্থার এক কর্তা রোমান ফারমানিয়াকের নেতৃত্বেই এই গুপ্তধনের চূড়ান্ত পর্যায়ের খোঁজ শুরু হতে চলেছে।
মিনকওস্কিইয়ের এই প্রাসাদে এক সময় বহু মানুষের যাতায়াত ছিল। তাদের মধ্যেই এক জন ছিলেন ভন স্টেইন। ভন নিযুক্ত ছিলেন হিটলারের সেনাবিাহিনীতে। এই প্রাসাদে তার প্রেমিকা থাকতেন। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন তিনি। কখনো কখনো প্রাসাদে থেকেও যেতেন। সেই তখন থেকেই গুপ্তধন লুকিয়ে রাখার নিরাপদ জায়গা হিসাবে এই প্রাসাদকেই বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
ভনের মতো হিটলার বাহিনীর আরও অনেক সেনাই এই প্রাসাদে সোনা, গয়না, মূল্যবান জিনিস লুকিয়ে রাখতেন। এই প্রাসাদে সে সময় মূলত নাজি বাহিনীর পতিতালয় ছিল। সেই সূত্রেই এই প্রাসাদে যাতায়াত শুরু হয়েছিল ভন এবং অন্যান্য হিটলারের সেনার। সেনাবাহিনীর প্রভাবশালী লোকেদের নিত্য যাতায়াত ছিল এখানে।
সেনা অফিসারদের নির্দেশেই সোনা, গয়না ইত্যাদি লুকিয়ে রাখার জন্য এই প্রাসাদকেই বেছে নিয়েছিলেন তারা। উদ্দেশ্য ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের পর এই গুপ্তধন দিয়ে সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধার করবেন হিটলার।
সিলেসিয়ান ব্রিজ ফাউন্ডেশন এই প্রাসাদ লিজ নেয়ার পর প্রথমে প্রেমিকাকে লেখা ভনের একটি চিঠি উদ্ধার করে। উদ্ধার হয় আরও কিছু নথিও। উদ্ধার হওয়া এই সমস্ত কাগজপত্র থেকে মোট ১১টি গুপ্তধনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। আর ওই চিঠিতে গুপ্তধনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রেমিকাকে অনুরোধ করেছেন ভন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে এই সম্পত্তি লুট করা হয়েছিল বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এছাড়াও এই অঞ্চলের বিত্তবান জার্মানরা সে সময় রাশিয়ার সেনার আগ্রাসন থেকে নিজেদের রক্ষা করার বিনিময়ে মূল্যবান গয়না-সহ বহুমূল্য জিনিস হিটলার বাহিনীর কাছে সমর্পণ করেছিলেন। এই গুপ্তধনের বেশির ভাগটাই বিত্তবান জার্মানদের। প্রাসাদের বিভিন্ন জায়গায় নাকি লুকনো রয়েছে সে সব সম্পত্তি। নীলনকশা বানিয়ে সেগুলিকেই খুঁড়ে বের করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।