স্বদেশ ডেস্ক: ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর শতাব্দী প্রাচীন রেল সেতুটি রয়েছে পুরোপুরি অরক্ষিত অবস্থায়। নয়শ মিটার দীর্ঘ এ রেল সেতুর দুদিকে নেই কোনো সুরক্ষা বেড়া (রেলিং)। পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত সেতুটি ঐতিহ্যবাহী হলেও এর রক্ষণাবেক্ষণে রেল র্র্কতৃপক্ষের তেমন কোনো নজরদারি নেই। জরাজীর্ণ এই সেতুর বেশিরভাগ কাঠের সিপারই গেছে ভেঙে। দুর্বৃত্তরা চুরি করে নিয়ে গেছে হুক বোল্ট ও ডগ স্পাইক। তারপরও সেতুটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামসহ পাঁচটি রুটে চলাচল করছে ট্রেন। এতে করে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। যদিও রেলওয়ের প্রকৌশলীরা এখনো এ সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করতে নারাজ, তবু তাদের এ বক্তব্যে ট্রেনযাত্রীরা আশ্বস্ত নয়।
ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত রেল সেতু দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী কয়েক ট্রেনযাত্রী জানান, সেতুটির ওপর ট্রেন উঠলেই নানা প্রশ্ন ও শঙ্কা ঘিরে ধরে তাদের। সর্বশেষ সেই শঙ্কা ও প্রশ্নের মাত্রা আরও জোরালো হয়েছে সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সেতু ভেঙে উপবন এক্সপ্রেস নদীতে পড়ে যাওয়ায়। ময়মনসিংহ জেলা সদরের প্রাচীন ল্যান্ডমার্ক হিসেবে পরিচিত ব্রিটিশ আমলে এই অঞ্চলে রেলের গোড়াপত্তনের ইতিহাসের সাক্ষী ব্রহ্মপুত্র রেল সেতু। ৮০র দশকের আগ পর্যন্ত এটিই ছিল ব্রহ্মপুত্রের ওপর একমাত্র সেতু, যা ময়মনসিংহবাসীর কাছে ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম সাক্ষী। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতুটি নিয়ে রেলওয়ে কর্মকর্তারা উদাসীন। সেতুটি সংস্কার করা না হলেও প্রতিদিন এর ওপর দিয়েই নেত্রকোনার জারিয়া ও মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে চলাচল করে হাজার হাজার যাত্রী। কোনো বিকল্প না থাকায় দুর্ঘটনার শঙ্কা মনে নিয়েই চলাচল করে এসব যাত্রী। তবে মৌলভীবাজারের ট্রেন দুর্ঘটনার পর তাদের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র রেল সেতুটি সংস্কারের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে।
দেখা যায়, সেতুটির ওপর রেললাইনের কাঠের সিপার ভাঙাচোরা, পুরনো ও জরাজীর্ণ। বেশিরভাগ জায়গায় হুক বোল্ট ও ডগ স্পাইক নেই। নগরীর কেওয়াটখালী রেলওয়ে লোকোশেড সংলগ্ন এই সেতুটির নিরাপত্তায় নেই কোনো ব্যবস্থা। ফলে হুক বোল্ট ও ডগ স্পাইক চুরি হচ্ছে হরহামেশাই।
ব্রহ্মপুত্র রেল সেতু সংস্কারের জন্য এলাকাবাসীর দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে রেলওয়ের ময়মনসিংহের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী সুকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এ ব্রিজটি মোটেও ঝুঁকিপূর্ণ নয়। সরকার এটিসহ সব ব্রিজের দিকেই সচেতন। তবে সংস্কার ও মেরামত প্রয়োজন, যেটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি সংস্কার বা মেরামতে ঊর্ধ্বতন র্র্কতৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া আছে। আর রেল র্র্কতৃপক্ষও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত।’