স্বদেশ ডেস্ক:
শীতে নয় গরমে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশে। শীতের শেষে গরম পড়ার সাথে সাথে করোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাইরোলজিস্টরা তা-ই বলছেন। ফেব্রুয়ারির পর গতকাল মঙ্গলবার সর্বোচ্চ ৯১২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৮ মার্চ করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮৪৫ জন। ধারণা করা হচ্ছে গরম বাড়ার সাথে সাথে সংক্রমণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক মো: নজরুল ইসলাম জানান, ইউরোপ-আমেরিকায় শীতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশে মনে হচ্ছে গরমে বৃদ্ধি পায়। গত বছরের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ ঘটেছিল। এরপর গরম ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলে সংক্রমণও কমতে শুরু করে। মনে করা হয়েছিল ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় করোনা বাড়বে; কিন্তু বাংলাদেশে ঘটেছে এর উল্টো। নভেম্বরে সামান্য একটু বাড়লেও ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে কমে গেছে। এখন আবার গরম পড়ার সাথে সাথেই বাড়তে শুরু করেছে।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম শীতে কেন বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ কমে গেছে- এর একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু এ জন্য গবেষণা করে সঠিকভাবে বলার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। তিনি বলেন, ফ্লু’র চারটি ভাইরাস বাংলাদেশে শীতকালে খুবই সক্রিয় থাকে। শীতকালে এই ভাইরাসগুলোর কারণে মানুষের সর্দি-জ্বর, কাশি হয়ে থাকে। সর্দি-জ্বরের এই ভাইরাসগুলো মানুষের কোষে গিয়ে বসে থাকে এবং উপসর্গ প্রকাশ করে থাকে। চারটি ভাইরাস কোষে গিয়ে বসে থাকায় কোষের ভেতরে নতুন কোনো ভাইরাসের (করোনা) প্রবেশের মতো আর জায়গা খালি থাকে না অথবা এই ভাইরাসগুলো নতুন করে করোনাভাইরাস কোষে প্রবেশ করতে চাইলে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে করোনা কোষে প্রবেশ করতে পারে না বলে মানুষকে দুর্বল করতে না পারে না। অথবা শরীরেই করোনাভাইরাসের মৃত্যু হয়, নয়তো সে অন্য দেহ থেকে বের হয়ে যায়।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ঠিক কিভাবে হচ্ছে তা জানার জন্য গবেষণা প্রয়োজন। এ কাজটি রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) দায়িত্ব। কিন্তু নতুন এ গবেষণাটি করার জন্য তাদের পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই। তিনি আইডিসিআরকে এ গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও খুব বেশি বাড়বে না মনে করছেন অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন।