স্বদেশ ডেস্ক:
হঠাৎ রাস্তায় দেখা। কাছে এসেই ‘আপনাকে চেনাচেনা লাগছে…’। কথা বলা শুরু করেন কোনো এক সুন্দরী। তার পর দ্রুত ভাব জমিয়ে ফেলেন। প্রেমের ফাঁদে ফেলে পটিয়ে কোনোভাবে নিয়ে যান বাসা বা মেসে। সেখানে যাওয়ার পরই তাকে ঘিরে ফেলেন ওই নারীর সহযোগীরা। দ্রুত নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তুলে ফেলে। ওই ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়াই এ চক্রের কাজ।
এ চক্রের ১১ সদস্যকে শুক্রবার রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ছয়জনই নারী, একজন কলেজছাত্রীও রয়েছেন। কখনো প্রেমের ফাঁদে ফেলে, কখনো রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে এভাবে ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল চক্রটি।
কোতোয়ালি থানায় শুক্রবার দুপুরে এ বিষয়ে ব্রিফিং করেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ। তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এর আগেও চক্রের কয়েকজনকে ধরা হয়েছিল। চক্রের বাকিদেরও ধরতে অভিযান চলছে।
আসামিদের কাছ থেকে এসব অপকর্মে ব্যবহৃত ১৩টি মোবাইলফোন ও তিনটি এটিএম কার্ড এবং ২২ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় রংপুর কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে বলে জানান ওসি।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি এক ব্যবসায়ী ও তার বন্ধুকে জিম্মি করে আড়াই লাখ ও বিকাশের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। আরেকজনকে ধরে নিয়ে জোর করে ডেবিট কার্ড ও পিন নম্বর নিয়ে বুথ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে নেয়। প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে তার পরিবারের কাছ থেকেও বিকাশের মাধ্যমে তিন দফায় আরও এক লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এ দুই ঘটনার সূত্র ধরে চক্রের ১১ সদস্যকে শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নগরীর ধাপ এলাকা থেকে প্রথমে তিন নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নগরীর নূরপুর এলাকাসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম কচি, আহসান হাবিব, বিষ্ণু রায় ওরফে আকাশ, সেকেন্দার রাজা ওরফে রাজা শ্যামল, নুর ইসলামসহ আরও আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।