স্বদেশ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা সোমবার সংসদে বলেছেন, বিএনপি তাদের চিরায়ত অভ্যাসের অংশ হিসেবে বাসে অগ্নিসংযোগ করে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় দুটি আসনে উপ- নির্বাচন, যখন নির্বাচন হচ্ছে তখন হঠাৎ করে কয়েকটি বাসে আগুন দেয়া হলো এবং নিজেরা আগুন দিয়ে আবার দোষ দিচ্ছে এটা নাকি সরকারি এজেন্টদের কাজ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আগুন দিয়ে আমাদের সরকারকে বদনামের ভাগীদার করবো কেন, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেয়াটা তো আমাদের দায়িত্ব। এখন অন্তত প্রযুক্তির কারণে সব জায়গায় সিসি টিভি রয়েছে। কাজেই হাতেনাতে ধরা পড়ে যাচ্ছে।’
বিএনপির উদ্দেশে সংসদ নেতা বলেন, ‘ক্ষমতায় এসেছেই জিয়াউর রহমান হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। তার প্রত্যেকটা ঘটনা যদি আপনারা দেখেন- তার ক্ষমতা দখলটাই হচ্ছে খুনের মধ্যে দিয়ে এবং যে দলটি সৃষ্টি করে গেছে তারা খুন, অস্ত্রের রাজনীতি এটাই ভালো বোঝে।’
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংসদ নেতা জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাই সৃষ্টি করা থেকে শুরু করে, গিবত করা, দুর্নীতি করা, অর্থ পাচার করা, নানা ধরনের অপকর্ম তারা (বিএনপি-জামায়াত) করে গেছে। কোনো কারণ নেই বাসে এভাবে আগুন দিয়ে পোড়ানোর। কিন্তু তারা ওটা করল কেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে। যখন মানুষের ভোট পাচ্ছে না, মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়েছে।’
হারুনুর রশীদকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিভিন্ন সময় এমন এমন কথা তোলেন, সব সময় আমরা কথার উত্তর দেই না। কিন্তু আজকে তিনি যে কথাগুলো বললেন এ সম্পর্কে তার দলের তথ্য নিয়ে কথা বলা উচিত ছিল।
‘তিনি (হারুন সাহেব) নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আদৌ তারা নির্বাচন করে কিনা? নির্বাচনে তারা অংশ নেন, নমিনেশন নিচ্ছেন আর যাচ্ছেন। কিন্তু নির্বাচনের দিনে কোনো এজেন্ট দেবেন না। একটা সময় নির্বাচন প্রত্যাহার করে বলে, নির্বাচন ঠিক হচ্ছে না। আসলে জনগণের সমর্থন তারা হারিয়েছেন অনেক আগেই,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, তারা দলের নেতা বানিয়েছে কাকে? খুনের মামলার আসামি, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি, যে দেশ থেকে পলাতক- তাকে বানানো হলো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দেশে কি এমন কোনো যোগ্য নেতা নেই যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হতে পারে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফেরারি, খুনের আসামি সে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাদের নেত্রী এতিমের টাকা আত্মসাৎ করায় সেই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তারপরেও তাকে বাসায় থাকতে দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, অপরাধের মধ্য দিয়েই যাদের জন্ম আর অপরাধ করাটাকেই তারা নিয়ম মানেন।
এ সময় সংসদকে ও অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত না করার জন্য বিএনপিকে অনুরোধ জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, কারণ মানুষ এটা গ্রহণ করবেনা। সাথে সাথে বিএনপিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্যও বলেন তিনি।
তিনি বিএনপি’র উদ্দেশ্যে বলেন,‘তারা জানে যে, জনগণের ভোট পাবে না। কারণ জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনেই জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তারপর থেকে নিজেদের অপকর্মের কারণে তারা মানুষের থেকে আরো দূরে সরে গেছে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।’
তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষের উন্নতি চাই। করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। কষ্টে আছে। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি মানুষকে সাহায্য করতে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে। কিন্তু তারা মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।
সংসদ নেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন,‘এই দু:সময়েও সরকারকে বদনাম করা আর নিজেদের কিছু ফায়দা লোটা। মানুষ এখন অন্ধ নয়, তারা এখন সব দেখেন। আর এই কথাটা বিএনপি নেতাদেরও বুঝা উচিত। যে কারনে এখন অনেক কিছুই অনেক তাড়াতাড়ি এখন ধরা পড়ে যায়।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আজকের পর বিএনপি’র উক্ত সাংসদ আর অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না।