স্বদেশ ডেস্ক:
কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর এপিবিএনের চেকপোস্টে গাড়ি থেকে নিরস্ত্র অবস্থায় নেমেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। গাড়িতে অস্ত্র রেখে হাত উঁচু করে বের হন তিনি। তা সত্ত্বেও সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলী সিনহাকে গুলি করেন। ঘটনার সময় লিয়াকতকে ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছিল। ঘটনার রাতে চেকপোস্টে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ২৭ আগস্ট সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় এপিবিএনের দুই সদস্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে তাদের হাজির
করা হয়। আদালত সূত্র জানায়, এপিবিএনের দুই সদস্য সিনহা নিহতের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। ওই দুজন হলেন- এপিবিএনের এসআই শাহজাহান ও কনস্টেবল রাজীব। এর আগের দিন প্রথমবারের মতো কোনো আসামি এ ঘটনায় জবানবন্দি দেন। তিনি হলেন- এপিবিএনের সদস্য কনস্টেবল আবদুল্লাহ।
সূত্র জানায়, সিনহা হত্যাকাণ্ডের স্পটটি এপিবিএনের চেকপোস্ট। ঘটনার সময় এই তিনজন দায়িত্বরত ছিলেন। কাজেই তাদের জবানবন্দি মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা ঘটনার আদ্যোপান্ত বর্ণনা দিয়েছেন।
এপিবিএন সদস্য আবদুল্লাহ তার জবানবন্দিতে বলেন, ‘সব কিছু ঘটে যায় মাত্র কয়েক মিনিটে। তবে ওই রাতে পরিদর্শক লিয়াকত আলী স্যারের আচরণ পেশাদার ছিল না। তখন তাকে ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল তিনি কিছু খুঁজছেন। চেকপোস্টে আমাদের কোনো কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। জ্যেষ্ঠতার প্রোটকল মেনে চেকপোস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন লিয়াকত স্যার।’
তবে র্যাবের তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ নিয়ে কোনো কথা বলতে চাননি।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনকে আসামি করে সিনহার বোন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। তদন্ত কমিটির অনুসন্ধান প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরই মধ্যে এ ঘটনায় ওসি প্রদীপের ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত থাকার কথা জানিয়েছে কমিটি।