স্বদেশ ডেস্ক;
শর্তসাপেক্ষে গতকাল মঙ্গলবার থেকে গণপরিবহনে করোনা সংক্রমণের আগের ভাড়া কার্যকর হয়েছে। তবে গতকাল প্রথমদিন অনেক গণপরিবহনের বিরুদ্ধে বর্ধিত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী বহন না করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্ত থাকলেও তা খুব একটা মানতে দেখা যায়নি।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে দুই মাসের বেশি সময় গণপরিবহন বন্ধ ছিল। এর পর সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় অর্ধেক সিট খালি রেখে বাস চালানোর
শর্তে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ায় সরকার। মালিকদের প্রস্তাবে সরকার বাড়তি ভাড়া কার্যকর করলেও পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার বেলায় ছিল উদাসীনতা। এ নিয়ে যাত্রী ও বিভিন্ন মহলের অভিযোগ ছিল। এ প্রেক্ষাপটে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে আগের ভাড়ায় বাস পূর্ণ করে যাত্রী তোলার প্রস্তাব দেন পরিবহন মালিকরা। সরকার এতে সায় দেওয়ায় গতকাল থেকে তা কার্যকর হয়েছে।
লকডাউনের আগের ভাড়া কার্যকরের কথা বলা হলেও গতকাল অধিকাংশ বাসেই বেশি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। শর্ত ভেঙে অনেক বাসে দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা হয়। বাসে সাবান, পানি, স্যানিটাইজার রাখা, মাস্ক পরার শর্তও মানতে দেখা যায়নি। যাত্রার আগে-পরে বাস জীবাণুমুক্ত করার শর্তও মানা হয়নি।
গতকালও যাত্রীদের কাছে আগের বর্ধিত ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করেছে হাতিরঝিলের চক্রাকার বাস। এ ছাড়া ঢাকা চাকা, গুলশান চাকাও বাড়তি ভাড়া আদায় করেছে। হাতিরঝিল চক্রাকার বাসে মূল ভাড়া দূরত্ব অনুযায়ী ১০, ১৫ ও ২০ টাকা। বর্ধিত ভাড়ার সময়ে এগুলো ৫-১০ টাকা করে বেড়েছিল। গতকালও এ পরিবহন আগের ভাড়ায় ফেরেনি।
চালক ও শ্রমিকরা জানান, ভাড়া কমলেও যাত্রী বাড়েনি। মালঞ্চ পরিবহনের চালক আবদুল মালেক জানান, করোনার আগে কর্মদিবসে ৫২ আসনের বাস ‘সিটিং’ করেও ১০-১২ জন যাত্রী দাঁড়িয়ে নিতেন। করোনার সময় সর্বোচ্চ ২৬ জন যাত্রীর নেওয়ার সুযোগ ছিল। তখন ১৪-১৫ যাত্রী পেতেন। এখন অফিস শুরু ও ছুটির সময়ও সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ জন যাত্রী পাচ্ছেন। দিনের বাকি সময় ২০-২৫ জন যাত্রী পান।
মোহাম্মদপুর থেকে খিলগাঁও রুটের বাস ‘মিডলাইন’। এ বাসে জিগাতলা থেকে গুলিস্তানের ভাড়া ২০ টাকা। অর্ধেক আসন খালি রাখার সময় ৩০ টাকা ভাড়া নেওয়া হতো। মোহাম্মদপুর থেকে খিলগাঁও তালতলার দূরত্ব ১৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার। নির্ধারিত ভাড়া ২৫ টাকা। বর্ধিত ভাড়ায় ৫০ টাকা নেওয়া হতো। আগের ভাড়ায় ফেরার কথা বলা হলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ৩৫ টাকা। বড় বাসে সরকার নির্ধারিত সর্বনি¤œ ভাড়া ৭ টাকা। অর্ধেক আসন খালি রাখার সময় তা বাড়িয়ে ১০ টাকা করা হয়েছিল। গতকালও কোনো বাসে ১০ টাকার কমে সর্বনি¤œ ভাড়া দেখা যায়নি। লোকাল হিসেবে চলা গাবতলী-সদরঘাট রুটের বাসেও সর্বনি¤œ ভাড়া ১০ টাকা নেওয়া হয়েছে। অথচ মিনিবাসে সর্বনি¤œ ভাড়া ৫ টাকা। দ্বিগুণ নিচ্ছে লোকাল বাসও।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, প্রথম দিনে বাড়তি ভাড়া নেওয়ায় ৩০টি মামলা করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতে। অভিযোগ পাওয়ামাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট বাস মালিকের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।