স্বদেশ ডেস্ক;
এক বছর আগে গায়ে ধাক্কা লাগা নিয়ে ঝগড়ার জের ধরে কিশোর গ্যাংয়ের প্রতিশোধের বলি হয়েছেন তরুণ মুন্না (১৮)। আশুরার দিন পুরান ঢাকার ওয়ারীতে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে ১৩ কিশোরসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে বাপ্পী (২৩), মো. ফেরদৌস (১৮), জিসান (১৯), লাবিব (১৮) প্রাপ্তবয়স্ক।
গত সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে ওয়ারী থানার একাধিক টিম। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
ডিসি ইফতেখার বলেন, চন্দ্রমোহন বসাক স্ট্রিটের রাধা-গোবিন্দ ঝিউ মন্দিরের কাছে গত ৩০ আগস্ট বিকাল ৫টার দিকে মুন্না (১৮) ও তার খালাত ভাই শাহিনকে (১৭) স্থানীয় কয়েক কিশোর-তরুণ ছুরিকাঘাত ও রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মুন্নাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত শাহিন আশঙ্কাজনক অবস্থায় একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় মুন্নার বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে ঘটনার পর দিন ওয়ারী থানায় মামলা করেন। পরবর্তী সময় ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়াদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের অধিকাংশই কর্মজীবী কিশোর।
শাহ ইফতেখার আরও জানান, গ্রেপ্তার বাপ্পি ও নিহত মুন্নার সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে আশুরার দিনেই গায়ে ধাক্কা লাগা নিয়ে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এবারের আশুরার দিন সকালে বিজয়, মুন্না ও তার বন্ধুরা বাপ্পি এবং সায়েমদের মারধর করে এক বছর আগের সেই প্রতিশোধ নেয়। এর জের ধরে বিকালে বাপ্পিরা সংগঠিত হয়ে মুন্না ও তার বন্ধুদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। গ্রেপ্তার বাপ্পি, ফেরদৌস ও সায়েম ঘটনার সময় মুন্নাকে চাকু এবং লোহার রোড দিয়ে আঘাত করে। বাকিরা সহযোগী হিসেবে ছিল। প্রকাশ্যে ঘটনাটি ঘটলেও আশপাশের লোকজন কেউ বাধা দেয়নি। ঝগড়া শক্রতায় রূপ নিয়ে প্রতিশোধ নিতেই এ হত্যাকাণ্ডে সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।
নিহতের ভাই শাওন জানান, পুরান ঢাকার লালচাঁন মহন রোডের ৪৬/১ নম্বর বাসায় সপরিবারে থাকতেন মুন্না। কাজ করতেন বাসের চালকের সহকারী হিসেবে। তার বাবার নাম মনিরুল ইসলাম। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের নতুনবাজার এলাকায়। আশুরার দিন নিজের মোটরসাইকেলে খালাত ভাই শাহিনকে নিয়ে মুন্না ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। বিকালে চন্দ্রমোহন বসাক স্ট্রিটের রাধা-গোবিন্দ ঝিউ মন্দিরের কাছে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাদের ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ভাইয়ের হত্যাকারী সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন শাওন।