স্বদেশ ডেস্ক:
ইতালির সংবাদপত্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবাধ্য আচরণ স্থান পেয়েছে। ফলে ইতালির নাগরিকদের সেদেশে বসবাসরত বাংলাদেশিদের প্রতি অবিশ্বাস ও অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। ইতালির সরকারের খরচে হোটেলে আইসোলেশনে রাখাসহ প্রয়োজন অনুসারে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তারপরও দেশটির সরকারের সিদ্ধান্ত এবং কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন নির্দেশনা অমান্য করায় এ মন্তব্য করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গতকাল শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইতালি ফিরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর কিছু প্রবাসী বাংলাদেশি সে দেশের সরকারি ব্যবস্থাপনার আইসোলেশন থেকে বের হয়ে পড়েছেন। ইতালির সরকার বাংলাদেশ থেকে গিয়ে করোনাভাইরাস শনাক্ত প্রায় ১০০ বাংলাদেশির সহায়তায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তাদের অধিকাংশকে ইতালির সরকারের খরচে হোটেলে আইসোলেশনে রাখাসহ প্রয়োজন অনুসারে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশিদের কয়েকজন ইতালি সরকারের সিদ্ধান্ত এবং কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশন নির্দেশনা অমান্য করেন। এভাবে সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করে তারা সে দেশে বসবাসরতদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ‘ভাইরাস বোমা’ বলেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তে- এমন খবর সঠিক নয় বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তার বক্তব্য গণমাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। দেশের কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে উল্লেখ করে শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তের উদ্ধৃতি দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, তিনি বাংলাদেশিদের ‘ভাইরাস বোমা’ বলেছেন। তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী এ কথা কখনোই বলেননি।
মাদ্রিদ সফরকালে স্প্যানিশ টিভি চ্যানেলে বক্তব্য দেওয়ার সময় ইতালির প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে সেদেশে অবতরণ করা ফ্লাইটে ২০ শতাংশের বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়ার বিষয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কঠিন পরিস্থিতিতে ইতালি আবারও ফিরে যেতে চায় না। সে কারণে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তবে এখানে উল্লেখ্য যে, আরও ১২টি দেশ থেকেও ইতালি ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়। ইতালিতে দেড় লাখেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। তাদের ইতালি ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় অবদান রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই, ইতালির প্রধানমন্ত্রী কখনও বাংলাদেশিদের সম্পর্কে এ জাতীয় কোনো কথা বলেননি।’
দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন ধরনের খবর প্রকাশ না করার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।