স্বদেশ ডেস্ক: কুমিল্লার দেবিদ্বারে গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে দিনমজুরদের জন্য সরকারি বরাদ্দের খাদ্য সহায়তার অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইউএনও কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় এক যুবক মারধরের শিকার হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী যুবক রাকিব বিন কুদ্দুস। উপজেলার ছেপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী যুবক বলেন, ‘চেয়ারম্যানের লোকেরা আমাকে “চোর চোর” বলে তাড়া করে প্রকাশ্যে পিটিয়েছে। চেয়ারম্যান নিজেও আমাকে বেদম পিঠিয়েছে। আমি বারবার বলেছি, কাকা আমি রোজা, আমাকে মারবেন না। তারপরও কেউ শোনেননি। একের পর এক কিলঘুষি, লাথি ও গাছের ঢাল দিয়ে আমাকে পিঠিয়েছে।’
‘আমি দৌঁড়ে পালাতে চেষ্টা করেও পালাতে পারিনি। পরে রাস্তায় একটি চলন্ত অটো রিকশায় লাফ দিয়ে উঠে কোনো রকম আমার জীবন বাঁচিয়েছি। কোনো অন্যায় ছাড়া এভাবে একজন চেয়ারম্যান নিজে ও তার ভাড়াটে লোক দিয়ে মারতে পারে না’, বলেন ভুক্তভোগী ওই যুবক।
রাকিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি এখন চেয়ারম্যানের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। তিনি যেকোনো সময় আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানাই, এ ঘটনায় যেন সুষ্ঠু তদন্ত হয়, আমি সঠিক বিচার দাবি করছি।’
রাকিব লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমার দোষ আমি প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হক সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রাণ যারা পায়নি তাদের পক্ষে কথা বলেছি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। এটাই কি আমার অপরাধ?’
এর আগে মারধরের শিকার রাকিব কুদ্দুস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাকিব হাসানের কাছে গুনাইঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে ত্রাণ ও মসজিদের তালিকাকরণের বিষয়ে জানতে চাওয়ায় মারধর ও প্রাণনাশের ঘটনায় তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মৌখিক আবেদন করেন।
মারধরের শিকার রাকিব গুনাইঘর উত্তর ইউপির ছেপাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুস সরকারের ছেলে এবং একটি বেসরকারি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
এসব অভিযোগের বিষয়ে গুনাইঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমার অফিসের সামনে এসে ওই যুবক মিথ্যা অভিযোগ করায় ইউপি সদস্য জব্বারের লোকজন রাস্তায় ওই যুবককে মারধর করেছে বলে শুনেছি। তখন আমি অফিসের ভেতরে ছিলাম। আমার ছেলেরা ওই সময় কে, কোথায় ছিল সেটা আমি জানি না। তবে আমার অফিসের সামনে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
এ বিষয়ে ইউওনও রাকিব হাসান বলেন, ‘মারধরের ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ শুনেছি। তবে আমার কাছে কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
প্রসঙ্গত, গত ২৪ মে বিকেলে গুনাইঘর ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের অস্থায়ী কার্যালয়ে খাদ্য সহায়তা ছাড়াও মসজিদে অর্থ বরাদ্দের তালিকায় না থাকার বিষয়ে কথা বলায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত ও লাঞ্ছিত করা হয় রাকিবকে।