শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ অপরাহ্ন

শেষ মুহূর্তে ঈদ কেনাকাটায় ধুম

শেষ মুহূর্তে ঈদ কেনাকাটায় ধুম

রাত পোহালেই ঈদ। শেষ মুহূর্তে রাজধানীর দোকানগুলোতে ঈদের কেনাকাটায় ঢল নেমেছে। বাদ যায়নি ফুটপাতও। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি থাকলেও দলে দলে বের হচ্ছে মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে বেচা-বিক্রি। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। বেশিরভাগ ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে নেই করোনা সংক্রমণের ভয়। যে যেভাবেই পারছে, সেভাবেই কিনে নিচ্ছে ঈদের নতুন পোশাক।

রাস্তার পাশে কিংবা ছোট-বড় মার্কেট সবখানেই মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে।

সীমিত পরিসরে রাজধানীর বিপণিবিতানগুলো খুললেও এতোদিন এমন ভীড় ছিলো না। ঈদের ঠিক আগমূহুর্তে দৃশ্যপটে এসেছে পরিবর্তন। ঈদের কেনাকাটায় বড়দের সঙ্গে ছোট শিশুদেরও দেখা মিলছে অহরহ। ফলে করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ছে।

অনেকেই বলেছেন, শিশুদের আবদার মেটাতেই এই সময় কেনাকাটা করতে আসা। করোনা সংকটে আনন্দ উদযাপনের বাস্তবতা নেই। বিক্রেতারা বলছেন, পেটের তাগিদেই বাধ্য হয়ে দোকান খুলেছেন তারা।

শনিবার রাজধানীর নিউ মার্কেটের সামনের সড়ক, মিরপুর ১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শ্যাওড়া পাড়া, মোহাম্মাদপুর, মালিবাগ, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ঈদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। মিরপুর-১ এ সড়কের উপর বসা প্রায় প্রতিটি দোকানে একসঙ্গে ১০-১২ জন ক্রেতা ভীড় করে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। অনেকের মুখে ছিলো না মাস্ক। একই পোশাকে একাধিক ব্যক্তির হাতের স্পর্শ পড়ছে। একজনের খালি হাতের স্পর্শ করা পোশাক কিনে নিচ্ছেন আরেকজন। ফলে যারা মার্কেট করতে আসছেন, তারা যেমন নিজেরা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন। তেমনি বাড়িতে থাকা ব্যক্তিদের ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আয়েশা আক্তার নামে এক নারী ক্রেতা জানান, তার ছোট ছেলে নতুন পোশাকের জন্য কান্নাকাটি করছেন। তাই তারজন্য পোশাক কিনতে আসছেন। তিনি আরো জানান, মার্কেটের দোকানে অনেক ভীড়। সেখানে কিনতে না পাড়ায় এখন ফুটপাত থেকে পছন্দ করে কিনছেন। একই পোশাক একাধিক ব্যক্তির হাতের স্পর্শ পড়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এছাড়া তো কোন উপায় নেই। সবাই তো আমার মতো কিনছে। এখন বাসায় গিয়ে পোশাক ধুয়ে দিবো।

মিজান নামের এক ব্যবসায়ী জানান, পেটের দায়ে ঝুঁকির মধ্যে পোশাক বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া কাল ঈদ। মানুষ শেষ মূহুর্তে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে কেনাকাটায়। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি জানান, এই সময়ে এসব নিয়ম মেনে ব্যবসা করা যায় না। আমি না চাইলেও মানুষ তা মানছে না। করোনার ভয় থাকার এই সময় কেউ আসছেন দেখার জন্য। কেউ দেখে এলোমেলো করে রেখে যাচ্ছেন পোশাক। কি করবো। ব্যবসা করলেই তো এমনটি হতেই পারে।

মিরপুর ১০ এলাকার বিপণীবিতানগুলোতে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের এক প্রকার ঢল নামে। তবে নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। বিক্রেতারা বলছেন, এবার ঈদে নারীদের পণ্যসামগ্রী বেশি বিক্রি হচ্ছে। নিউ মার্কেটে এলাকায় কিছু মার্কেটের প্রবেশ মুখে জীবাণুনাশক দ্রব্য রাখা হলে তা ব্যবহার করছে না ক্রেতারা। অনেকে তা দেখেও, না দেখার মতো করে চলে যাচ্ছেন। ফলে এসব মার্কেটে করোনার সংক্রমণ ছড়াতে পাড়ে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মার্কেটে আসছেন মানুষ । এতে অনেক ক্রেতা সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মার্কেটে আসা আগতদের আমরা জীবাণুনাশক দ্রব্য ব্যবহারসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দোকানে আসার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কেনাকাটা করতে প্রাপ্ত বয়স্করা যেমন আসছেন, তেমনি তাদের সাথে আসছে শিশুরাও। এতে শিশুদের মাঝেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি রয়েছে। এদিকে শনিবার পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে সাড়ে ৪শ এর বেশি। গত কয়েক দিনে আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা তুলনমূলক অনেক বেশি। ফলে ঈদের কেনাকাটার পর এই ভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877