শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

আবার বিপদে চীন

করোনাভাইরাস মহামারির প্রাণকেন্দ্র চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা মাত্র কয়েকদিন আগেই তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস দ্বিতীয় ধাপে বিস্তারের আশঙ্কায় দেশটির সরকার নতুন করে আবার বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার উহানে করোনায় চারজনের প্রাণহানির পর স্থানীয়দের আবার ঘরে বন্দী এবং যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিদেশ ফেরতেদের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় উহানের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা সেখানকার বাসিন্দাদের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে উহানে করোনার বিস্তার শুরু হওয়ার পর দেশটিতে ৮১ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ সংক্রমিত হন এবং মারা যান ৩ হাজার ৩২২ জন। তবে দেশটির করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সংশয় রয়েছে। অনেকেই বলছেন, করোনার আসল চিত্র আড়াল করেছে চীন।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, আজ শুক্রবার চীনে নতুন করে ৩১ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত দুজন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন, বাকিরা বিদেশ ফেরত। এ ছাড়া মারা গেছেন চারজন, যাদের সবাই উহানের বাসিন্দা। গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে উহানে করোনায় সংক্রমণ এবং মৃত্যু নাটকীয়ভাবে কমে আসে।

দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির উহান শাখার প্রধান ওয়াং ঝংলিন বলেন, অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক-উভয় ঝুঁকির কারণে উহানে মহামারি প্রত্যাবর্তনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এর প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

গত সপ্তাহে উহান থেকে বেশ কিছু বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে যাদের সুস্থতার সবুজ সংকেত আছে, তারা ভ্রমণ করতে পারবেন বলে জানানো হয়। আগামী ৮ এপ্রিল থেকে সব ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়ার সময় নির্ধারিত ছিল।

এই মহামারি মোকাবিলা করতে গিয়ে প্রাণ হারানো ১৪ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে শহীদ আখ্যা দিয়ে আগামীকাল শনিবার দেশজুড়ে শোকদিবস পালনের ঘোষণা দিয়েছে চীন। ওইদিন দেশের সব প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি দূতাবাস ও কনস্যুলেটে পতাকা অর্ধনমিত রাখার পাশাপাশি সব ধরনের বিনোদন অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। মৃত স্বাস্থ্যকর্মীদের শ্রদ্ধায় সকাল ১০টায় তিন মিনিটের নীরবতা পালন করবে চীন।

ডিসেম্বরে উহানে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির ব্যাপারে প্রথম জানতে পেরেছিলেন চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং। সহকর্মীদের অনলাইন বার্তায় এই ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়ার পর চীন সরকার এই চিকিৎসককে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।

এমনকি আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা তাকে তুলে নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে এ ব্যাপারে আর কোনো কথা না বলার নির্দেশ দেন। পরে এই চিকৎসকও রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা যান। তবে করোনায় মৃত এই চিকিৎসককেও শহীদের মর্যাদা দিয়েছে চীন সরকার।

চীন থেকে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আজ রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ৪১ হাজার ১০৬ জন। আর মারা গেছেন ৫৫ হাজার ২০৩ জন। এ ছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৩৩২ জন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877