স্বদেশ ডেস্ক: নতুন দশক হোক পৃথিবীকে শুশ্রূষা করার। সেই কাজ ভালভাবে করলে বছরে বিশ্বের ৫ জনকে পুরস্কৃত করা হবে। পুরস্কারদাতা ব্রিটিশ রাজকুমার উইলিয়াম এবং তাঁর স্ত্রী কেট স্বয়ং। নববর্ষে এই ঘোষণা করে বিশ্ববাসীকে পরিবেশ সচেতনতায় উৎসাহিত করলেন কেট, উইলিয়াম। ঘোষণা করলেন, ২০২১ থেকে ২০৩০ পর্যন্ত পরিবেশ সংক্রান্ত ভাল কাজের জন্য প্রতি বছর ৫ জন ব্যক্তি কিংবা সংগঠনকে নগদ পুরস্কার দেওয়া হবে, যার পোশাকি নাম ‘আর্থহোস্ট প্রাইজ’।
মূলত তিনটি বিষয়ের উপর হবে বিচার। উইলিয়াম নিজেই জানিয়েছেন, নেতৃত্বদান, উদ্ভাবনী এবং সমস্যার সমাধান – তিনটি কাজের নিরিখে বিবেচ্য হবে কে বা কারা কতটা পরিবেশের স্বার্থে কাজ করছে। তাঁদের এই ঘোষণায় পরিবেশপ্রেমী মহল তো বটেই, খুশি সাধারণ মানুষও। পরিবেশ রক্ষায় রাজকুমারের এমন ভূমিকায় অনেকেই তাঁকে নতুন করে চিনলেন বলে জানাচ্ছেন।
বলা হয়, সমাজে যা কিছু সমস্যা, তার আঁচ উচ্চবিত্ত সম্প্রদায়ের গায়ে সেভাবে লাগে না। মধ্য ও নিম্নমধ্যবিত্তরাই সেসব প্রতিকূলতার মধ্যে পড়েন। পরিত্রাণের উপায় খোঁজেন। উচ্চবিত্তদের দিন কাটে নিশ্চিন্তে, আরামেই। কিন্তু এর মধ্যে ব্যতিক্রম একটি বিষয়ই। তা হল বিশ্ব উষ্ণায়ন। এই বিশ্বব্যপী সমস্যা থেকে নিস্তার নেই কারও। কারণ, প্রকৃতি আর্থ-সামাজিক ভেদাভেদ নিরপেক্ষ। তাই এর রোষে জ্বলতে হবে সবাইকেই। এ নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানরা যতই উদাসীন থাকুন, ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা কিন্তু বিপদ বেশ টের পেয়েছেন। তাই তো ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অফ কেমব্রিজ উইলিয়াম এবং ক্যাথরিন পরিবেশ রক্ষায় এমন ব্যতিক্রমী ঘোষণা করে দিলেন। কেনসিংটন প্যালেসও তাঁদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অফ কেমব্রিজের রয়্যাল ফাউন্ডেশন থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চিনে এবং নভেম্বরে গ্লাসগোয় দু’টি পরিবেশ সম্মেলন আছে। সেখানে পৃথিবীকে বাঁচাতে অন্তত ৫০ রকমের সমাধানের রাস্তা বেরিয়ে আসবে। কিন্তু কাজের কাজ কতটা হবে, তা নিয়ে প্রতিবারের মতো এবারও প্রশ্নের অবকাশ থাকছে। আর কেট-উইলিয়ামের চ্যালেঞ্জ সেখান থেকেই। তাঁরা বলছেন, এই পুরস্কার ঘোষণার মাধ্যমেই সক্রিয়ভাবে পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হবেন সকলে। পুরস্কার পাওয়ার জন্য সবাই কাজকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই গ্রহণ করবেন। যেখানে পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিক মহাকাশ গবেষণার তোড়জোড় করছে, সেখানে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর শুশ্রূষা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। কেট-উইলিয়ামের পুরস্কার ঘোষণা অন্তত সেই কাজে প্রেরণা জোগাবে বলেই আশা। রাজপরিবার ঘনিষ্ঠ মহলে গুঞ্জন, এই প্রথম কোনও ব্রিটিশ রাজকুমার এমন নজিরবিহীন কাজে নিজের ছাপ রাখতে চলেছেন।