স্বদেশ ডেস্ক:
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির সংসদ সদস্যদের (এমপি) পদত্যাগ করে রাজপথের আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ২০ দলীয় জোট।
জোটের নেতারা বলছেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনটিকে একদিকে তারা গণতন্ত্র হত্যা ও ভোটাধিকার হরণ দিবস হিসেবে পালন করছেন। কিন্তু বিএনপির এমপিরা সংসদে রয়েছেন। এমন দ্বিমুখী আচরণ সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেবে না।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোটাধিকার হরণ দিবস হিসেবে আখ্যা দিয়ে আজ সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন জোট নেতারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ২০ দলের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোটের নেতারা এখানে জোরদার আন্দোলনের কথা বলেছেন। আমরাও মনে করি, সঙ্কট উত্তোরণে জোরদার আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। সবাই মিলে সেই আন্দোলনের রণকৌশল ঠিক করতে হবে। আমরা শুধু কর্মসূচি দিতে চাই না, সেটা বাস্তবায়নও করতে চাই।’
২০ দলীয় জোট নেতাদের উদ্দেশে নজরুল বলেন, ‘লড়াইয়ের ময়দানে কে কতটুকু সাহসিকতার সাথে নেতৃত্ব দিতে পারবেন, সেটাই বড় কথা। শুধু বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না।’
আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার বলেন, ‘গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর দেশে কোনো ভোট হয়নি, তার আগের রাতে জনগণের ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে আওয়ামী লীগ আজকে নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনটিকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করছে। একে আমরা ধিক্কার ও নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি, ওইদিন গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।’
মিয়া গোলাম পরোয়ার আরও বলেন, ‘লড়াই ছাড়া বিকল্প নেই। সেই লড়াইয়ের ময়দান প্রস্তুত হচ্ছে। ফ্যাসিবাদের অপমানজনক বিদায় হবে, সবাই এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে। মহাসংগ্রামের মাধ্যমে এদের বিদায় করতে হবে।’
জমিয়তের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, ‘রাজপথে না নামতে পারলে কিছু হবে না। এ জন্য আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, রাজপথে নামতে হবে।’
এলডিপির একাংশের শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘আমরা একদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা ও কালো দিবস বলছি, আবার আমাদের এমপিরা সংসদে রয়েছেন। তারা সংসদে থাকেন কেমন করে? আহ্বান জানাব, তারা যেন সংসদ থেকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে রাজপথের আন্দোলনে শামিল হন।’
অনুষ্ঠানে এলডিপির সেলিমের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে বিএনপির এমপিদের সংসদ থেকে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানান এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহেরও।
এদিকে, ২০ দলের আলোচনা সভার শুরুতে সভামঞ্চে চেয়ারে বসা নিয়ে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন নেতারা। এতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।