রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৪ অপরাহ্ন

বায়ুদুষণ বিপজ্জনক মাত্রায় : কেমন হবে বাংলাদশে-ভারত প্রথম ম্যাচ?

বায়ুদুষণ বিপজ্জনক মাত্রায় : কেমন হবে বাংলাদশে-ভারত প্রথম ম্যাচ?

স্বদেশ ডেস্ক:

দিল্লিতে বিপজ্জনক বায়ুদুষণ নিয়ে গভীর উদ্বেগের মধ্যে রোববার ভারতের রাজধানীতে হতে চলেছে বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট সিরিজের প্রথম ম্যাচ।

ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়াম টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।

তবে দিল্লিতে বায়ুদুষণ এখন এতটাই মারাত্মক রূপ নিয়েছে যে, জনস্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দিল্লির সব স্কুল কয়েক দিনের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভারতেও অনেকেই বলছেন, এত বায়ুদূষণের মধ্যে দিল্লিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হওয়া উচিত নয়।

তবে ক্রীড়া সাংবাদিক বর্ষণ কবির দিল্লি থেকে জানাচ্ছেন, দিল্লিতে নেমে তারাও এটা অনুভব করছেন যে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, কখনো কখনো চোখও জ্বালা করে।

“বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের সময় দেখা গেছে, উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান লিটন দাসসহ তিন-চারজন খেলোয়াড় এবং বোলিং কোচ ড্যানিয়েল ভেটোরি মাঠে নেমেছেন মুখোশ পরে।”

সংবাদ মাধ্যমে শুক্রবারের প্র্যাকটিসের সময় ড্যানিয়েল ভেটোরি, হেড কোচ রাসেল ডোমিংগো এবং ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জির মুখোশপরা ছবিও বেরিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টারের রিপোর্টে বলা হয়, মি. ডোমিংগো দিল্লির ধোঁয়াশা সম্পর্কে বলেছেন “পরিস্থিতি আদর্শ নয়, কিন্তু দুটি দলই এই এই অবস্থার মধ্যে খেলবে – তাই এটা নিয়ে অভিযোগ তুলতে চাই না। এর মধ্যেই খেলতে হবে।”

দিল্লিতে বায়ুদূষণের কারণে এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়মিত খেলা হচ্ছে না। আইপিএলের কয়েকটি ম্যাচ অবশ্য দিল্লিতে হয়, যাতে বিদেশি খেলোয়াড়রাও এসে খেলেন। তবে দিল্লিতে শ্রীলংকা-ভারত টেস্ট ম্যাচের সময় খেলোয়াড়দের মাঠে মুখোশ পরে থাকার ছবি নিয়ে সমালোচনাও হয়েছিল।

তবে বর্ষণ কবির বলছিলেন, ভারতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের এই পূর্ণাঙ্গ সফর যেন হয় – সে জন্য অনেকদিন ধরেই দেনদরবার চলছিল, তাই এই দূষণের ব্যাপারটা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামানো হয় নি বলেই মনে হয়।

“বিসিবি হয়তো মনে করেছে যে সফরটা ভালোয়-ভালোয় হয়ে গেলেই ভালো।”

বর্ষণ কবির জানাচ্ছেন,বাংলাদেশ দলের অনুশীলন দেখতে বেশ কিছু উৎসাহী দর্শককেও দেখা গেছে মাঠে।

দিল্লি শহরের বায়ুদুষণ নিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কতটা উদ্বিগ্ন – এ প্রশ্ন করা হলে বর্ষণ কবির বলেন, দিল্লির পরিবেশ নিয়ে অন্তত দুজন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের সাথে কথা বলেছেন তিনি।

তারা বলেছেন যে এরকম বায়ুদূষণের মধ্যে খেলায় মনসংযোগ করা সহজ নয়।

কেমন খেলবে সাকিব-তামিমবিহীন বাংলাদেশ দল?
বর্ষণ কবির বলছিলেন, ক্রিকেটীয় যুক্তিতে বাংলাদেশের একটা ম্যাচ অন্তত ভালো খেলার কথা হয়তো জেতাও সম্ভব।

“ভারতের টি-২০ দলের দুর্দান্ত বোলিং লাইনআপ থাকা সত্বেও জসপ্রীত বুমরাহ নেই তাই এটা একটা ‘এ্যাডভান্টেজ’ – স্লগ ওভারে বাংলাদেশের রান করাটা তুলনামূলকভাবে সহজ হতে পারে।”

“বাংলাদেশ দলের তিন পেসার আল-আমিন, শফিউল ও মুস্তাফিজ – এই তিনজনের আক্রমণের যে বৈচিত্র্য তা ভারতের চেয়ে খুব বেশি পিছিয়ে নেই।”

“আর এসব ক্রিকেটীয় যুক্তির বাইরে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় – যেবার আইসিএলের জন্য বাংলাদেশ দলের ১০ জন ক্রিকেটার চলে গিয়েছিলেন, তখন এই মুশফিক, সাকিবরা ছিলেন একেবারেই নতুন খেলোয়াড়।”

“তাদের নিয়েই বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডেতে জিতেছিল, চট্টগ্রাম টেস্টেও খুব ভালো অবস্থানে থেকেও হেরে গিয়েছিল।”

“এরকম আরো দৃষ্টান্ত আছে যে বাংলাদেশ খারাপ অবস্থানে থেকেও দারুণ লড়াই করতে পেরেছে।”

“তাই তামিম-সাকিবের অভাব বাংলাদেশকে তাড়া করবে ঠিকই কিন্তু এই ইতিহাস থেকে ক্রিকেটাররা অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে পারে।”

এ ব্যাপারটা নিয়ে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকেও প্রশ্ন করা হয়েছিল সংবাদ সম্মেলনে।

তবে রোহিত শর্মা জবাব দেন যে এ দু’জন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার না থাকার পরও বাংলাদেশ দলটি যথেষ্ট শক্তিশালী, কারণ এ দলটি অনেক দিন ধরে একসাথে খেলছে।

“এখানে একা হাতে ম্যাচ বের করে নেবার মতো কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার আছে। তাই এ দলটিও তাদের দিনে যে কোনো বড় দলকে হারিয়ে দিতে পারে” – বলেন তিনি।

তাই বাংলাদেশ দলটিকে হালকাভাবে নেবার কোনো কারণ দেখতে পাচ্ছেন না রোহিত শর্মা এবং তাদের হারাতে হলে প্রতিটি বিভাগেই ভারতকে শতভাগ ভালো করতে হবে – বলেন রোহিত শর্মা।
সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877