বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ অপরাহ্ন

১৫ বছর পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে জাপানের ৬ প্রতিষ্ঠান

১৫ বছর পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে জাপানের ৬ প্রতিষ্ঠান

স্বদেশ ডেস্ক:

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ প্রায় ৯৯ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হওয়ার পর আগামী বছরের জুনের শুরুতে শুরু হবে অপারেশনাল কার্যক্রম। বৈশি^ক মান বজায় রাখতে জাপানের ৬টি প্রতিষ্ঠানকে এই থার্ড টার্মিনাল যৌথভাবে পরিচালনার দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ও সিকিউরিটি-সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া টার্মিনালের প্রয়োজনীয় জনবল, লাউঞ্জ, দোকান, অফিস, পার্কিং ভাড়া দেওয়াসহ যাবতীয় দেখভালের দায়িত্ব থাকবে এসব প্রতিষ্ঠানের হাতে। এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান সুমি তুমি ও নিপ্পন কোয়েরিসহ ৬টি ঠিকাদারি কোম্পানিকে দায়িত্বভার প্রদানের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়। চূড়ান্ত চুক্তির পর এসব প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) অগ্রিম প্রদান করবে ২ হাজার কোটি টাকা।

এ ছাড়া টার্মিনালের অপারেশনাল কর্মকা- থেকে অর্জিত লভ্যাংশের অর্ধেক পাবে বেবিচক, বাকি অর্ধেক পাবে ৬টি প্রতিষ্ঠান। এই টাকায় থার্ড টার্মিনালের জন্য জাইকা থেকে ঋণ নেওয়া ১৫ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করবে বেবিচক। এদিকে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং কাজ তদারকিতে ২ বছরের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে চুক্তিতে যাচ্ছে বেবিচক। যদিও বিমান কর্তৃপক্ষ জাপানি প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানেই কাজ করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বেবিচক সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কার্যক্রমের চুক্তি সম্পন্ন হলে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে লোকবল নিয়োগ শুরু করবে। নিরাপত্তার দায়িত্বে আপাতত ৩ হাজার ৪৯২ জন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া সব মিলিয়ে ৬ হাজারের বেশি লোকবল লাগবে এই টার্মিনালে। এদের প্রশিক্ষণসহ পদায়নের জন্য লাগবে প্রায় তিন বছর। এ জন্য লোকবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পাশাপাশি বেবিচকের প্রশিক্ষিত লোকবল দিয়ে থার্ড টার্মিনালের কাজ চালানো হবে।

বেবিচকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের। তবে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবার মান নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। এখানে আন্তর্জাতিক মানের সেবা দেওয়ার বিকল্প নেই। এ জন্য টার্মিনাল পরিচালনার পাশাপাশি গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবাও জাপানি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করানোর সিদ্ধান্ত ছিল আগে থেকেই। কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিমান শুরু থেকেই এই সেবা দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে আসছিল। তাদের মোটামুটি সক্ষমতাও রয়েছে। এখন সেবার মান বৃদ্ধি করতে পারলে আন্তর্জাতিক মানের সেবা দেওয়া সম্ভব। সবকিছু বিবেচনা করে আপাতত বিমানকে ২ বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা শর্তপূরণে ব্যর্থ হলে অন্যদের দেওয়া হবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া গত সোমবার আমাদের সময়কে বলেন, আমরা দ্রুত থার্ড টার্মিনাল চালু করতে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী বছরের মধ্যেই চালু হবে, আশা করছি।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর একনেকে অনুমোদন পায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প ফেজ-১। ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রকল্পের প্রথম সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হয় ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকার। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি রোহানি বাহারিনের করা নকশায় তৃতীয় টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিটা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং, যার নাম দেওয়া হয়েছে অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালে দিনে ৩০টিরও বেশি উড়োজাহাজ সংস্থার ১২০ থেকে ১৩০টি বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে। প্রতিদিন এসব উড়োজাহাজের প্রায় ২০ হাজার যাত্রী বিমানবন্দরের দুটি টার্মিনাল ব্যবহার করে। এই হিসাবে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর সেবা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। থার্ড টার্মিনাল চালু হলে আরও ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877