স্বদেশ ডেস্ক:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পরিষ্কার কথা, বিএনপিকে বাদ দিয়ে কিছু করার চেষ্টা করবেন না। এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। একবার রাজনৈতিক বিরাজনীকরণ, মাইনাস টু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আবারো ওই রাস্তায় যাওয়ার কথা কেউ চিন্তা করবেন না।’
রোববার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণসভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি নয় শুধু, এখনো বাংলাদেশ কিন্তু সংকট অতিক্রম করতে পারেনি। হাসিনা গেছে, এতে যারা বাংলাদেশী বিদেশে থাকে তাদের আনন্দ হয়েছে। আমরা একটা ভয়াবহ পাথরের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছি, বুকের ওপর চেপে থাকা পাথরটা গেছে। পাথর গেলো এখনো কিন্তু স্বস্তি নেই, কোথাও যেন আটকে আছি।’
‘এখন জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেন’- অন্তর্বতী সরকারের প্রতি এমন ইঙ্গিত করেন বিএনপির এই নেতা।
আজকের সংবাদপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘খবরের পাতায় দেখলাম, আওয়ামী লীগ সরকার প্রতি বছর ১২ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সবচেয়ে বড় ধ্বংস করেছে বাংলাদেশের মোলারিরিটি, মানুষের নৈতিকতা ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। যেখানে যাবেন চোর, চোর মানে আওয়ামী লীগের চোর। সব জায়গায় ওরা বসে আছে।’
‘রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় বসার জন্য উসখুস করছে’ এক উপদেষ্টা এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক, আমরা আশা করিনি যে এই মাপের মানুষ এ ধরনের কথা বলবেন। আমরা রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উসখুস করছি না, আমরা বাংলাদেশকে স্বৈরাচার শেখ হাসিনামুক্ত করার জন্য কাজ করছি, জীবন ও প্রাণ দিয়েছি। এখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা যুদ্ধ করছি। কেন যুদ্ধ করছি? যত দেরি করবেন, তখন হাসিনা আবার ফিরে আসবে।’
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অতিদ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন। জঞ্জাল সাফ করে ফেলুন। পদে পদে আমরা ক্ষমতায় যেতে উসখুস করছি, এ সমস্ত কথা বলে জনমতকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমরা তো ক্ষমতায় যেতেই চাই। আমরা রাজনীতি তো করিই ক্ষমতার জন্য।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খোকা ভাই একজন লিজেন্ড ছিলেন। তিনি ’৭১, ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সরব ভূমিকায় ছিলেন। তিনি কিন্তু শেখ হাসিনাকে হারিয়েছিলেন নির্বাচনে। একথা অনেকে এখন বলেন না। তাদের জন্ম হয়েছিল রাজনীতি করে মানুষের কল্যাণ করার জন্য। তার মৃত্যু আমাদের কাছে পাহাড়ের মতো ভারী হয়ে উঠেছিল।’
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে করে তিনি বলেন, ‘খোকা ও আব্বাস সাহেব যখন তরুণ ছিলেন তখন ঢাকা কাঁপতো। এখন তোমাদেরকে দেখাতে হবে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজুন সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসান প্রমুখ।