রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০১ অপরাহ্ন

ভারতের এক শহর নিজেদের দাবি পাকিস্তানের

ভারতের এক শহর নিজেদের দাবি পাকিস্তানের

স্বদেশ ডেস্ক:

ভারতের গুজরাট রাজ্যের জুনাগড় শহরকে নতুন করে নিজেদের অংশ বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুমতাজ জাহরা বালোচ দাবি করেন, ১৯৪৮ সাল থেকেই জুনাগড় অঞ্চলকে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে ভারত।

তিনি এই দখলদারির নিন্দা জানান। এ বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থান সবসময়ই স্পষ্ট বলেও দাবি করেন মুমতাজ।

তিনি বলেন, ‘দেশ ভাগের সময়ে জুনাগড় পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়েছিল। পরে অবৈধভাবে তা দখল করে ভারত। গোটা বিষয়টিকে ঐতিহাসিক এবং আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে পাকিস্তানের জনগণ। জুনাগড় পাকিস্তানের একটি অংশ এবং এই অংশ অবৈধভাবে দখল করে জাতিসঙ্ঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে ভারত।’

মুমতাজ দাবি করেছেন, পাকিস্তানের তরফে সর্বদাই জুনাগড়ের বিষয়টি রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক মঞ্চে উত্থাপিত হয়েছে। পাকিস্তান এবার এ নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘জুনাগড়কে ভারতের অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মিরের মতো একটি অসমাপ্ত অ্যাজেন্ডা হিসেবে বিবেচনা করে পাকিস্তান।’

তবে জুনাগড় নিয়ে পাকিস্তানের দাবি নতুন নয়। ২০২০ সালে নেপালের পর ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলকে তাদের রাজনৈতিক মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছিল পাকিস্তান। দেশটির মন্ত্রিসভাও তাতে অনুমোদন দিয়েছিল।

পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু-কাশ্মির এবং লাদাখের কিছু অংশ ওই মানচিত্রে রাখা হয়েছিল। একই সাথে গুজরাটের জুনাগড় ও মানবগড় শহর এবং স্যর ক্রিক অঞ্চলও পাকিস্তানের অংশ বলে দাবি করা হয়েছিল।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদালোপের বর্ষপূর্তির ঠিক এক দিন আগে, এই নতুন মানচিত্র উন্মোচন করে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছিলেন, ‘এই মানচিত্র প্রত্যেক পাকিস্তানের নাগরিক এবং কাশ্মিরের মানুষের আশার প্রতীক।’

প্রায় চার বছর আগে পাকিস্তান ওই রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করার পর ভারত সেটিকে অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিল। জুনাগড়কে পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত করাকেও পাকিস্তানের ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষা’ পোষণ বলে দাবি করেছিল নয়াদিল্লি।

অন্য দিকে, ইসলামাবাদের দাবি ছিল, জুনাগড়ের শেষ নবাব মহম্মদ জাহাঙ্গির খান নাকি চাইতেন, যেন পাকিস্তানেরই অংশ হয় জুনাগড়। করাচিতে ৬৭ বছর বয়সে মৃত্যুর সময় জাহাঙ্গির নাকি বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানের অংশ জুনাগড়।’

জাহাঙ্গির পূর্বপুরুষদের শাসন করা জমিতে কখনো ফিরে যেতে পারেননি। তবে তিনি মাটির টান ভুলতেও পারেননি। তিনি ওই সময়ে বলেছিলেন, ‘১৯৪৭ সালে আমার দাদু পাকিস্তানে যোগদানের জন্য স্বাক্ষর করেছিলেন। তবে এর জন্য তাকে তার রাজত্ব হারাতে হয়েছিল। আমরা এখনো আমাদের রাজ্যের (জুনাগড়) জন্য লড়াই করছি। বিষয়টি জাতিসঙ্ঘে বিচারাধীন।’

২০০৪ সালে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জাহাঙ্গির তার শিকড়ের টানের কথা জানিয়েছিলেন এবং তা খুঁজে পাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার ইচ্ছা জুনাগড় যাওয়া এবং সেই রাজ্যের মানুষের সাথে দেখা করা। কামনা করি, দেশ ভাগের আগে সেখানে মুসলিম এবং হিন্দুদের ভ্রাতৃত্ববোধ যেমন ছিল, তেমনই যেন থাকে।’

সেই জুনাগড়কে পাকিস্তানের অংশ দেখিয়ে বছর চারেক আগে মানচিত্র প্রকাশ করেছিলেন ইমরান খান। সরকার বদলের পর আবার বিষয়টি চাঙ্গা হয়েছে। শাহবাজ সরকারও দাবি করেছে, জুনাগড় অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে ভারত।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877