স্বদেশ ডেস্ক: এটা করা যাবে না। ওটা করা যাবে না। বারান্দায় দাঁড়ানো যাবে না। শপিং-এ যাওয়া নিষেধ। রাতের খাওয়াও বাইরে খেতে যাওয়া যাবে না। মাঠে অনুশীলন এবং খেলা শেষে সোজা হোটেলে ফিরতে হবে। বাকিটা সময় সেই হোটেলেই বন্দি। অবসরের সেই সময়টা ইনডোরে ক্যারম খেলে কাটিয়েছেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা। পাকিস্তান সফরে এবারের শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের সফরসুচি ছিল এমনই! হ্যাঁ, মাঠের খেলায় কোন বিঘœ ঘটেনি। মাঠে এবং হোটেলে সর্বত্র কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু খেলার পরে অবসর সময়ে স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরার কোন সুযোগই রাখা হয়নি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের জন্য। আর এতেই মহাবিরক্ত হয়েছেন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি শাম্মি সিলভা। ভদ্রলোক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন- শিগগিরই সামনের সময়ে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল আবার পাকিস্তান সফরে যাবে কিনা সেটা এখন আর নিশ্চিত নয়!
উল্লেখ্য ২০০৯ সালের মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সশস্ত্র হামলার পর আইসিসি নিরাপত্তার কারণে পাকিস্তানে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনে আর সম্মত হয়নি। ২০১১ সালের যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের মর্যাদাও হারায় পাকিস্তান। একপ্রকার পাকিস্তানের মাটিতে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট ‘অচ্ছুতই’ হয়ে যায়। হোম সিরিজগুলো পাকিস্তান বাধ্য হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলে। টেস্ট খেলুড়ে কোন দেশ পাকিস্তান সফরে নিরাপত্তার কারণে সফর করতে রাজি ছিল না। চলতি বছর শ্রীলঙ্কাই প্রথম দল যারা আবার আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট খেলতে পাকিস্তান সফরে যায়।
সম্প্রতি পাকিস্তানের লাহোর এবং করাচিতে শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যায়। ওয়ানডে সিরিজ জিতে পাকিস্তান। আর টি-টোয়েন্টির ট্রফি জেতে শ্রীলঙ্কা। তবে এই দুই সিরিজের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পাকিস্তানের কড়াকড়িতে পুরোদুস্তর বিরক্ত শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি শাম্মি সিলভা এই প্রসঙ্গে বলছিলেন-‘খেলোয়াড়দের খেলার সময় বাদে সারাক্ষণ হোটেলেই বন্দি অবস্থায় থাকতে হতো। আমি নিজেও তিন-চারদিন ছিলাম। আমি এই অল্প সময়েই বিরক্ত হয়ে গেছি। পাকিস্তানের মাটিতে আমাদের টেস্ট সিরিজ বাকি আছে। এখন আমাকে দলের ক্রিকেটার এবং সার্পেটিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। তারা এমন করে সফরে যেতে আগ্রহী কিনা- সেটা আগে শুনতে হবে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা অবশ্যই ভাল পারফরমেন্স দেখাতে চাই।’ ক্রিকেটারদের সারাক্ষণ হোটেলে থাকার বিষয়ে শাম্মি বলছিলেন-‘সত্যি বলতে কি ক্রিকেটাররা একসঙ্গে হোটেলে থাকলে তাদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ে। বেশি স্বাধীনতা ক্রিকেটারদের জন্য ভাল নয়। তাদের তো শপিংয়ে যাওয়ার প্রয়োজন। বাইরে কোথাও খেতে যাওয়ার দরকার। এমনটাই তো হওয়ার কথা। খেলার সময় বাদে তারা তো সারাক্ষণ হোটেলে আটকে থাকতে পারে না। টেস্ট সিরিজের আগে আমাদের এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে হবে।’ নতুন বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলেরও পাকিস্তান সফরে টেস্ট সিরিজ খেলতে যাওয়ার সূচি আছে। তার আগে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৭ দল আগামী ২২ অক্টোবর পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলেরও পাকিস্তান সফরের কথা রয়েছে।