স্বদেশ ডেস্ক:
বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন। শুক্রবার আদালতে জবানবন্দি দেয়ার সময় হত্যার কথা স্বীকার করে এই আসামি। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত মেফতাহুলের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আবরার হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিলেন মেফতাহুল। এর আগে আবরার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার আদালতে জবানবন্দি দেন আসামি ইফতি মোশাররফ।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে মেফতাহুলকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান মেফতাহুলের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
আদালতের কাছে দেয়া প্রতিবেদনে পুলিশ জানিয়েছে, আবরার হত্যা মামলার দায় স্বীকার করে এর আগে ইফতি মোশাররফ নামের এক আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামি মেফতাহুল ইসলামও আবরার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, এটি ইফতিই আদালতকে বলেছেন। মেফতাহুল নিজেও এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতের কাছে জবানবন্দি দিতে চান। পরে আদালতের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন মেফতাহুল। প্রতিবেদনে পুলিশ আরও জানিয়েছে, হলের ভিডিও ফুটেজ এবং পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আসামি মেফতাহুল ইসলাম আবরার হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
মেফতাহুল বুয়েটের মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। শেরেবাংলা হলের ৫০৬ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার আসামি ইফতি মোশাররফ আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বলেন, আবরার ফাহাদকে ক্রিকেটের স্টাম্প আর প্লাস্টিকের মোটা দড়ি (স্কিপিং রোপ) দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে মাটিতে শুয়ে পড়েন আবরার। তাকে মাটি থেকে তুলে আবারও পেটানো হয়। কয়েক ঘণ্টা পর বমি করতে শুরু করেন আবরার। তিনবার বমি করার পর নিস্তেজ হয়ে যান তিনি।
এর আগে আবরার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি অমিত সাহা ও হোসেন মোহাম্মদ তোহাকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এই আদেশ দেন।
এদিকে আবরার হত্যার এজাহারভুক্ত ১৯ আসামিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম শুক্রবার বিকেলে এ কথা জানিয়েছেন।
আবরার ফাহাদ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। শেরেবাংলা হলের নিচতলায় ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। গত রোববার রাতে তাকে নিজ কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়। এখন পর্যন্ত আবরার হত্যায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনের নাম মামলার এজাহারে রয়েছে।