শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০১ পূর্বাহ্ন

দর্শকের রুচি তৈরি করতে হবে : চঞ্চল চৌধুরী

দর্শকের রুচি তৈরি করতে হবে : চঞ্চল চৌধুরী

শাকিল মাহমুদ: চঞ্চল চৌধুরী মঞ্চ, টেলিভিশন নাটক এবং চলচ্চিত্রে ছড়িয়েছেন প্রতিভার দ্যুতি। এখন পূজার আমেজে আছেন এই তারকা। একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি অনেক কিছু বলেছেন, পাঠকদের কাছে তা তুলে ধরা হলো:-
মন্ডপে মন্ডপে যাওয়ার বয়স নেই: প্রতিবারের মতো এবারের দুর্গাপূজাও কাটছে গ্রামের বাড়ি পাবনায়। বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঘরোয়া পরিবেশে পূজার আনন্দ ভাগ করে দিতে চাই। আগে মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে পূজা দেখতাম। এখন আর মন্ডপে মন্ডপে ঘুরতে যাওয়ার বয়স নেই। বাসায় বসে পূজার ছুটি কাটাচ্ছি। তবে পরিবারের অন্যরা পূজায় মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আজ পূজা শেষ, কালই ঢাকায় ফিরব।
ছোটবেলার দুর্গাপূজা: আমি এমন একটি পরিবারে জন্মেছি, যেখানে কিছুটা অর্থসংকট ছিলই। সারা বছর নতুন কাপড় কিনতে পরতাম না। পূজা উপলক্ষে নতুন জামা পেতাম। তা দর্জির দোকানে সেলাই করানো হতো। এমনও হয়েছে, ২০ বার দর্জির দোকানে গেছি, জামাটি বানানো হয়েছে কি না জানতে। দর্জি বিরক্ত হতেন। এখন সেই স্মৃতিগুলোই আমার কাছে মধুর মনে হয়।
চিত্রশিল্পী না হয়ে অভিনেতা: আমি তিনটা বিষয়ে দুর্বল ছিলাম চিত্রকলা, সংগীত ও অভিনয়। তিনটা কাজ তো একসঙ্গে করা যাবে না। আর চিত্রশিল্পী না হয়ে অভিনেতা হওয়ার জন্য কোনো প্ল্যান ছিল না। একসঙ্গে তিনটা শুরু করেছিলাম। টুকটাক গান করতাম, ছবি আঁকতাম আর আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করতাম। একসময় দেখলাম অভিনয়ের রাস্তাটা আমাকে সামনে এগিয়ে দিল। আর চারুকলায় পড়ার বিষয়টাকে আমার কাছে মনে হয় শিল্পচর্চার প্রাথমিক জ্ঞান লাভ করা। আমার গলায় ভালো সুর আছে, তার মানে এই নয় আমি সংগীতশিল্পী হতে পারব। আমি ভালো ছবি আঁকি মানেই আমাকে চিত্রশিল্পী হিসেবে দাঁড় করাবে তাও নয়। পরিশ্রম, চর্চা আর সাধনা দিয়েই অভিনেতা হিসেবে নিজেকে তৈরি করেছি। প্রতিনিয়ত ভালো কিছুর জন্য তৈরি হচ্ছি।
ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায়: জনপ্রিয়তার হিসাবটা আমি কখনো করি না। সেটা হোক টেলিভিশন, হোক মঞ্চ কিংবা সিনেমা। শিল্পী হিসেবে আমার দায়িত্ব সুন্দর গল্পে, সুন্দর চরিত্রে সুন্দরভাবে অভিনয় করা। জনপ্রিয়তা লাভ-ক্ষতির হিসাব তখনই আসে যখন সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে না। আমি আরণ্যক নাট্যদলে কাজ করেছি, এখনো করছি। অভিনয় তো আমি শুধু বিনোদনের জন্য করি না। আমার সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে, ভালোবাসা আছে, কর্তব্য আছেÑআমি একজন শিল্পী হিসেবে আমার কাজের মাধ্যমে তা পালন করতে চাই।
গল্পনির্ভর সিনেমায় দর্শক: দর্শকের রুচি তৈরি করতে হবে। ‘মনপুরা’ যখন বানানো হলো, তখন ওটা দরকার ছিল। অনেক ভালো ভালো নির্মাতা আছে, যারা ঠিকঠাক নাটক বানিয়েছে। কিন্তু যখনই সিনেমায় আসে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলে। আর আমাদের দেশে সিনেমার ফিল্ড তৈরি হয়নি। সৎ কোনো মানুষ সিনেমায় লগ্নি করতে আসে না। অসৎ কাজে হাজার কোটি টাকা লগ্নি করবে কিন্তু ভালো কোনো সিনেমায় টাকা দিতে রাজি নয়। আর ভালো সিনেমার ফিল্ড তৈরি করতে হলে দর্শকদের দায়িত্বশীল হতে হবে, রুচির উন্নয়ন ঘটাতে হবে। আমাদেরও উচিত দর্শকের রুচির উন্নয়ন ঘটাতে ভালো কাজ করা। না হলে আমাদের সিনেমা যে টিপিক্যাল বাউন্ডারির মধ্যে আটকে আছে, সেখানেই আটকে থাকবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877