স্বদেশ ডেস্ক:
মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত ইরানের জেনারেল কাসেম সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জোড়া বিস্ফোরণে ১০৩ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলার পেছনে কারা ছিল তা সরাসরি না জানালেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দিকে ইঙ্গিত করেছে ইরান।
গতকাল বুধবার সোলাইমানির কবর জিয়ারত করছিলেন অসংখ্য মানুষ। সেসময়ই হামলা চালানো হয়।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল খামেনি বলেছেন,নিরপরাধ মানুষের রক্তে রঞ্জিত যাদের হাত তাদের পাশাপাশি শয়তানি বুদ্ধি ও মস্তিষ্ক খাটিয়ে যারা তাদেরকে অন্যায় পথে নিয়ে গেছে তাদের সবাই ন্যায়সঙ্গত শাস্তি ও কঠোর দমনের সম্মুখীন হবে। শত্রুদের জানা উচিৎ এই বিপর্যয় সৃষ্টির কারণে কঠোর জবাব পাবে তারা।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পার্স টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলার ঘটনার পরপরই ইরানের বিভিন্ন শহরে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে জনগণ ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লব সফল হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের রোষানলে পড়ে ইরান। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় বিপ্লবের পর থেকে এ পর্যন্ত ইরানে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের বহু ব্যক্তিত্ব রয়েছেন।
পার্স টুডে জানায়, গতকালের সন্ত্রাসী হামলার পেছনেও ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। হামলার আগের দিন লেবাননে ড্রোনের সাহায্যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে হামাসের উপপ্রধান সালেহ আল আরুরি-কে হত্যা করে ইসরাইল। কয়েক দিন আগেই সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে ইরানের সামরিক কমান্ডার সাইয়্যেদ রাজি মুসাভিকে হত্যা করা হয়। এই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বকে হত্যার ধারাবাহিকতায় কেরমানে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা ইরানের।
ইরানি বিশ্লেষকরা বলেন, গতকালের সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গেও ইসরায়েল ও তার প্রধান পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্র জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, ইরানে বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই জড়িত নয়। এই বিস্ফোরণের পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে- এটা বিশ্বাস করারও কোনো কারণ নেই বলে তিনি দাবি করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় যুদ্ধের ময়দানে ফিলিস্তিনি সংগ্রামীদের সঙ্গে পেরে উঠছে না ইসরায়েলি বাহিনী, এ কারণে তারা এ ধরণের সন্ত্রাসী হামলা বাড়িয়ে দিয়েছে। কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ার আশঙ্কায় ইরানের কেরমানে হামলার দায় স্বীকার করছে না ইসরায়েল। কিন্তু আসলে এই হামলার পেছনে তারাই রয়েছে।