স্বদেশ ডেস্ক:
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরাইল গাজায় স্থল অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু এই অভিযান কখন চালানো হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি।
তবে বিবিসির যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রচার অংশীদার সিবিসি জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলি স্থল অভিযান পেছানো হয়েছে।
এর আগে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, তেল আবিব থেকে টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, স্থল অভিযানটি কখন থেকে শুরু করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার ঐক্যমতের ভিত্তিতে নেয়া হবে।
‘আমরা এরইমধ্যে হাজার হাজার হামাস সদস্যকে হত্যা করেছি এবং এটা শুরু মাত্র,’ বলেন তিনি।
‘একই সাথে আমরা একটি স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি বলতে চাই না যে সেটি কখন, কিভাবে বা কতজন থাকবে। স্থল অভিযান নিয়ে আমরা কী কী বিষয়ে হিসাব-নিকাশ করছি সে সম্পর্কেও বিস্তারিত বলতে চাই না আমি, সাধারণ মানুষ এগুলো সম্পর্কে কিছু জানে না এবং এটাই হওয়া উচিত।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, “৬ অক্টোবরের আগে যেমনটা ছিল ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সেই ‘স্থিতিশীল’ অবস্থানে ফিরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।”
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মঙ্গলবার ইসরাইল ও হামাসের যুদ্ধের বিষয়ে তার দেয়া একটি বিবৃতির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখে তিনি অবাক হয়েছেন। বলেন, বিবৃতিতে তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে ইসরাইলে ঘটিত ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের’ নিন্দা জানান তিনি। সেখানে তিনি আরো বলেছেন, এই হামলা ‘বিনা কারণে’ হয়নি।
তার প্রকৃত বিবৃতিতে গুতেরেস বলেন, ‘ফিলিস্তিনি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা হামাসের হামলাকে বৈধতা দিতে পারে না।’
এদিকে গাজায় জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে জরুরি চিকিৎসা সেবা বাদে আর সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে হাসপাতালগুলো।
ইসরাইল গাজায় জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে এবং অভিযোগ তুলেছে যে হামাস এগুলোর মজুদ করে রেখেছে।
গাজায় থাকা হামাসের পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরাইলের হামলায় এখনো পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজার মানুষ মারা গেছে।
ইসরাইলে হামাসের হামলায় কমপক্ষে ১৪০০ জন নিহত হয়। এছাড়া আরো দুই শতাধিক মানুষকে গাজায় বন্দী করে রাখা হয়েছে।
গাজার হাসপাতালের কাছে বিস্ফোরণ
খান ইউনিসের নাসার হাসপাতাল থেকে মাত্র দুই শ’ মিটার দূরের একটি তিনতলা ভবনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় একটি বড় বিমান হামলা হয়েছে।
এই হামলায় কমপক্ষে অর্ধশত হতাহত হয়েছে। অনেকে বেঁচে আছে, অনেকে মারা গেছে। হতাহতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় অনেক অ্যাম্বুলেন্স।
খান ইউনিস হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে উত্তরাঞ্চল থেকে বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল। এই স্থান নিরাপদ হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বিমান হামলার এক তৃতীয়াংশ এই অঞ্চলকে লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে।
আর যারা নিহত হয়েছে তাদের কমপক্ষে অর্ধেকই এই কথিত ‘নিরাপদ এলাকায়’ হয়েছে।
হতাহতদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। জরুরি নয় এমন বিভাগ যেমন কিডনি ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে যাতে করে জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনা যায়।
খান ইউনিস থেকে বিবিসির প্রতিবেদক রুশদি আবুআলুফ বলেন, আমরা জানি না যে, এই এলাকায় জ্বালানি কখন আসবে। জাতিসঙ্ঘ বলছে, আমাদের ৪০ হাজার ট্রাক দরকার। সেখানে এ পর্যন্ত আমরা ৫০টির মতো পেয়েছি।
সূত্র : বিবিসি